জয়পুরহাটের আক্কেলপুর রেলস্টেশনের দক্ষিণ দিকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দুরে দল্লাপাড়া গ্রামের মাঠের বেলতলী নামক স্থানে শনিবার বিকেল চারটায় ঢাকাগামী কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনে ঝাঁপ দিয়ে আতহত্যা করেছে এক নারী।
ঘটনার পর প্রায় আড়াই ঘন্টা ছিন্নভিন্ন লাশটি রেললাইনের ওপর পড়েছিল। লাশের ওপর দিয়ে দুটি ট্রেনও গেছে। এরপর ঘটনাটি জানাজানি হলে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে স্বজনেরা ঘটনাস্থলে এসে লাশটি শনাক্ত করেন।
নিহত ওইব্যক্তি হলেন, বেবী রানী দাস (৫০)। তিনি আক্কেলপুর পৌরশহরের বিহারপুর মহল্রল অমল চন্দ্র দাসের স্ত্রী। তার দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন বলে তার স্বজনেরা জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই ব্যক্তি লাল শাড়ী পড়ে আউট সিগন্যালের পাশে একটি খেঁজুরগাছে বসে ছিলেন। তখন পথ দিয়ে একজন কৃষিশ্রমিক যাচ্ছিলেন। তিনি ট্রেন আসা দেখে গাছের নিচ থেকে উঠে রেললাইনের ওপর এসে দাঁড়ান। ওই কৃষিশ্রমিক তাকে রেললাইনের ওপর থেকে নামিয়ে এনে বুঝিয়ে বাড়িতে চলে যান। ঘন্টাখানিক পর লাল শাড়িপড়া ওইব্যক্তি প্রথম স্থান থেকে দক্ষিণ দিকে প্রায় ৩০ গজ দুরে গিয়ে ভদ্রকালী গ্রামের বেলতলী নামক স্থানে ঢাকাগামী কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনে ঝাঁপ দেন। এতে তার দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে রেললাইনের ওপর ছিল। পরে কৃষিশ্রমিকেরা মাঠে আসার সময় রেললাইনের ওপর ছিন্নভিন্ন লাশ দেখতে পেয়ে লোকজনদের খবর দেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত লাশটি অজ্ঞাত হিসেবে রেললাইনের ওপর পড়েছিল। এরপর পৌরশহরের বিহারপুর মহল্লার টগর কুমার দাস এসে লাশটি তার বড় বোন বেবী রানীর বলে শনাক্ত করেন।
কৃষিশ্রমিক কুতুব আলী বলেন, দুপুরে মাঠ থেকে বাড়ি যাওয়ার সময় ওই মহিলা রেল লাইনের উপরে দাড়িয়ে থাকা দেখে এগিয়ে গেছিলাম। তখন ট্রেনও আসছিল। আমি জোর করে তখন টেনে লাইনের উপর থেকে সরিয়ে আনি এবং তাকে বুঝিয়ে বলি যে নিজের জীবন শেষ করা যাবেনা। এরপর তাকে বুঝিয়ে চলে আসি। পরে জানতে পারি সে স্থান পরিবর্তন করে ট্রেনে ঝাঁপ দিয়ে আতহত্যা করেছে।
নিহতের ভাই টগর কুমার দাস বলেন, আমার বড় বোন মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। শনিবার সকালে লাল শাড়ি পরে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। ট্রেনে কাটা পড়ে একব্যক্তির মৃত্যুর খবর পেয়ে বিকেলে সাড়ে পাঁচটার দিকে ঘটনাস্থলে এসে লাশটি শনাক্ত করেছি।
আক্কেলপুর রেলস্টেশনের মাস্টার রেহেনা পারভিন বলেন, ঢাকাগামী কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনে ওইব্যক্তি ঝাপ দিয়ে
আত্নহত্যা করেছেন। সান্তাহার রেলওয়ে থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে।