আত্রাইয়ে কিশোরীকে বিষ প্রয়োগে হত্যা, দাদা-চাচার বিরুদ্ধে অভিযোগ

নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় বিষ প্রয়োগে সানজিদা (১৬) নামের এক কিশোরীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকালে নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তোলেন নিহত কিশোরীর স্বজনেরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত সানজিদার মামা ফজলুর রহমান। এ সময় কিশোরীর মা খুশি বেগম, নানা মোসলেম প্রামাণিক, চাচা সাইফুল ইসলাম মণ্ডল ও মামা হামিদুল প্রামাণিক উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে ফজলুর রহমান জানান, নিহত সানজিদা আত্রাই উপজেলার আন্দারকোটা গ্রামের সৌদি প্রবাসী শামসুল মণ্ডলের মেয়ে এবং ঘোষগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। শামসুল মণ্ডল দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরব ও দুবাইয়ে কর্মরত। তাঁর স্ত্রী খুশি বেগম মেয়ে সানজিদাকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করছিলেন।
তিনি জানান, শামসুল মণ্ডল তাঁর বাবার কাছ থেকে বসতভিটার উত্তর পাশে একটি জমি কিনে চার বছর আগে একটি মাটির ঘর তৈরি করেন। পরবর্তীতে সেখানে পাকা বাড়ি নির্মাণের উদ্যোগ নিলে শামসুলের বাবা মোসলেম ও ভাই সাজিম মণ্ডল বাধা দেন। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ শুরু হয়। ওই বিরোধের জেরে গত ৯ এপ্রিল কিশোরী সানজিদার শরীরে বিষ প্রয়োগ করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ফজলুর রহমান দাবি করেন, মৃত্যুর আগে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সানজিদা জানিয়েছিল, তার দাদা ও চাচা ইনজেকশনের মাধ্যমে তার শরীরে বিষ প্রয়োগ করেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও প্রমাণও রয়েছে বলে জানান তিনি। পরবর্তীতে ১২ এপ্রিল রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ৯ এপ্রিল সকালে প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরে সানজিদা। সে সময় তার মা বাড়ির বাইরে ছিলেন। এই সুযোগে দাদা ও চাচা ঘরে ঢুকে তাকে বিষের ইনজেকশন প্রয়োগ করেন। পরে অসুস্থ অবস্থায় তাকে প্রথমে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতাল এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় রাজশাহী রাজপাড়া থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু (ইউডি) মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত মোসলেম মণ্ডল ও সাজিম মণ্ডল পলাতক রয়েছেন।
অভিযুক্ত সাজিম মণ্ডলের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়, ফলে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আত্রাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাবুদ্দীন বলেন, ‘মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তবে ঘটনার ইউডি মামলা রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
What's Your Reaction?






