আলফাডাঙ্গায় টুপি ফেলার জেরে সংঘর্ষ, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় মসজিদে এক কিশোরের মাথায় থাকা টুপি অন্য কিশোর ফেলে দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। সংঘর্ষে দুই নারী গুরুতর আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১১ মার্চ উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের জয়দেবপুর এলাকায় সরোয়ার মোল্যার ছেলে জাকারিয়া (১৪) ও বারাংকুলা চরপাড়া এলাকার নুর ইসলাম মোল্যার ছেলে হৃদয় (১২) মাগরিবের নামাজ পড়তে মসজিদে যায়। নামাজের সময় হৃদয় জাকারিয়ার মাথা থেকে টুপি ফেলে দেয়, যা নিয়ে দু’জনের মধ্যে ঝগড়া ও হাতাহাতি হয়।
পরে নামাজ শেষে হৃদয়ের পরিবারের সদস্যরা জাকারিয়ার বাড়িতে গিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়ায়। স্থানীয়রা তখন বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। কিন্তু ঘটনাটি সেখানেই থেমে থাকেনি।
পরদিন ১৩ মার্চ রাত ৮টার দিকে বারাংকুলা চরপাড়া এলাকার কবির মোল্যা ও ইয়াছিন মোল্যার নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জয়দেবপুর মধ্যপাড়া এলাকায় হামলা চালায়। হামলাকারীরা জাফর মোল্যা, সাইফুল মোল্যাসহ চারটি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
এ সময় বাড়ির লোকজন বাধা দিতে গেলে জাফর মোল্যার স্ত্রী পারভীন বেগম (৪৫) ও কামাল মোল্যার স্ত্রী তানিয়া বেগম (২৭) গুরুতর আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তবে তানিয়া বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহত পারভীন বেগম বলেন, "পোলাপানে টুপি নিয়ে মসজিদে মারামারি করেছে। কিন্তু সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কবির মোল্যা ও ইয়াছিন মোল্যা লোকজন নিয়ে আমাদের বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে। তারা ঘরের মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। বাধা দিতে গেলে আমাকে এবং আমার জাকে (দেবরের স্ত্রী) মারধর করেছে।"
অভিযুক্ত ইয়াছিন মোল্যা পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, "বুধবার ভোররাতে সাইফুল মোল্যার নেতৃত্বে ১৫-২০ জন লোক আমার বসতঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। আমাদের পক্ষের তিনজন নারী আহত হয়েছে এবং তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।"
এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুন-অর-রশীদ বলেন, "সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। উভয়পক্ষের লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
সংঘর্ষের পর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উভয়পক্ষকে শান্ত রাখতে চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে পরিস্থিতি এখনো কিছুটা উত্তেজনাপূর্ণ রয়েছে বলে জানা গেছে।
What's Your Reaction?






