আলুর দরপতনে দিশেহারা কৃষকরা

উত্তরাঞ্চলে আলু তোলার মৌসুম শুরু হলেও দামের পতনে চরম হতাশায় পড়েছেন কৃষকরা। বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে প্রতি কেজি আলু ১০ থেকে ১২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন।
কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ক্রেতা না থাকায় তারা না পারছেন সরাসরি বিক্রি করতে, না পারছেন হিমাগারে সংরক্ষণ করতে। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ও হিমাগার মালিকদের যোগসাজশে সাধারণ কৃষকেরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
গত বছর হিমাগারে প্রতি কেজি আলু সংরক্ষণের ভাড়া ছিল ৪ টাকা, যা এবার এক লাফে বেড়ে ৮ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট আগেই হিমাগারের বুকিং সম্পন্ন করায় সাধারণ কৃষকরা সেখানে আলু সংরক্ষণের সুযোগ পাচ্ছেন না। বাধ্য হয়ে তারা ক্ষেত থেকেই কম দামে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
এ বছর প্রতি বিঘা জমিতে আলু চাষ করতে ৬০-৭০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে, যেখানে প্রতি বিঘায় গড়ে ৪,৪৫০ কেজি আলু উৎপাদিত হয়েছে। বর্তমান বাজারদরে বিক্রি করে কৃষকরা উৎপাদন খরচের অর্ধেকও তুলতে পারছেন না। এতে তারা ব্যাংক ও মহাজনী ঋণের বোঝায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
কৃষকরা সরকারের কাছে দ্রুত বাজার নিয়ন্ত্রণ, হিমাগার ভাড়া সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা এবং সিন্ডিকেট ভেঙে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় তারা ভবিষ্যতে আলু চাষ থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হবেন, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা না গেলে আগামীতে কৃষকেরা চরম সংকটে পড়বেন। এজন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ জরুরি।
What's Your Reaction?






