আশুলিয়ায় চাঁদার দাবীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলা
আশুলিয়ায় ২০ লাখ টাকা চাঁদার দাবীতে মনোয়ার হোসেন রাজু ওরফে রাজ কুমার এর নেতৃত্বে তার বাহিনী দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ন্যাশনাল ইনিশিয়াল এন্ড হাই স্কুল নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে।
বুধবার সকালে হামলার বিষয়ে নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার এসআই (উপ-পরিদর্শক) মোঃ মাসুদ আল মামুন। এরআগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়া মোল্লা বাড়ী মসজিদ সংলগ্ন অবস্থিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানান, গতকাল রাতে রাজ কুমার ও তার লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অতর্কিত হামলা চালায় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটকে তালা লাগানো দেখে রাম দা দিয়ে ফটকে কোপাতে থাকে। এসময়ে আশপাশের দোকানীরা ভয়ে দোকানপাট বন্ধ করে সেখান থেকে সটকে পড়ে। পরে দোকানপাটের সাটারও কোপাতে থাকে। এবং সেসময়ে স্কুল চালাতে হলে রাজ কুমার ও তার বাহিনীকে ২০:লাখ টাকা চাদা না দেওয়া হলে স্কুলটি চালাতে দেওয়া হবে না বলেও হুমকি দেয়।
ইদ্রিস আলী নামে এক টেইলার্স দোকানী বলেন, এই রাজুর অপকর্মে এলাকাবাসী অতিষ্ট। সে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পিস্তল দিয়ে ফায়ারিং করতে করতে স্কুলের সামনে এসে প্রথমে সিসি ক্যামেরা ভাংচুর করে। এরপরে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইব্রাহিমকে স্কুল থেকে বের হতে বলে। সে বের না হলে স্কুলের ফটক ও দোকানপাট কোপাতে থাকে। এবং হুমকি দিয়ে চলে যায়।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মোঃ ইব্রাহিম বলেন, গতকাল সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিটের সময়ে সন্ত্রাসী বাহিনী মনোয়ার হোসেন রাজ কুমার ওরফে রাজুর নেতৃত্বে রাকিব, লিটন, রাজুর ভাতিজা নাহিদ, সোহাগ, রাসেল ও কমরেট রাকিব আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে এসে পিস্তল দিয়ে গুলি ছুড়ে। তখন শিক্ষকরা দৌড়ে গিয়ে দ্বিতীয় ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়। এসময়ে তারা স্কুলের ভিতরে ঢুকতে পারলে আমাকে হত্যা করে ফেলতো। এসময়ে তারা ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দিলে স্কুল চালাতে পারবো না। এমনও কি স্কুলের মেয়েদেরকে রেপ করা হবে বলেও হুমকিও দেয়।
প্রধান শিক্ষক আরও অভিযোগ করে বলেন, এরআগে ৫ই আগষ্ট সরকার পতনের পরে দেশের অস্থিতিশীল অবস্থা থাকায় তখন এলাকাবাসী ডাকাত আতঙ্কে ছিলো। ওই সময়ে আমরা স্কুলের শিক্ষক ও এলাকাবাসী মিলে রাতে পাহাড়া দেওয়ার জন্য মিটিং করি এবং সেই অনুযায়ী রাতে পাহাড়া দেই। আমরা মিটিং ও রাতে পাহাড়া কেন দিলাম এটা রাজুর অপকর্ম মূলক কাজে ব্যাঘাত ঘটে। এবং সেই থেকে আমার ওপর সে ক্ষিপ্ত হয়। আমি এই বিষয়ে সুষ্ঠ বিচারের জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি। এঘটনার পর থেকে এলাকায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এবিষয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ আল-মামুন বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম এবং এবিষয়ে থানায় অভিযোগ হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আবু বকর সিদ্দিক বলেন, খবর পাওয়ার পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিদর্শন করেন। এর সুষ্ঠ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু বকর সরকার বলেন, এবিষয়ে ওই স্কুলের এক শিক্ষক আমাকে জানানোর পরে থানার শরণাপন্ন হতে বলেছি। আমি পুলিশ বাহিনীকে বলে দিয়েছি। সন্ত্রাসী যেই হোক না কেন, রাষ্ট্রের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
What's Your Reaction?