আশুলিয়ায় তীব্র গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লোডশেডিং, অতিষ্ঠ জনজীবন

তীব্র গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আশুলিয়া, সাভার ও ধামরাই অঞ্চলে লোডশেডিং বেড়েছে। প্রচণ্ড গরমে যখন জনজীবন নাকাল, তখন বিদ্যুৎ বিভ্রাট দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। জ্বালানি সংকটে দৈনিক চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা, কোথাও আবার আট থেকে ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকছে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এতে ব্যাহত হচ্ছে লেখাপড়া, ব্যবসা, চিকিৎসাসেবা ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। তীব্র গরমে অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে বাড়ছে অসুস্থতার হারও।
সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিদ্যুৎ না থাকায় মধ্যরাতেও মানুষ ঘরের বাইরে আশ্রয় নিচ্ছেন। কেউ ফুটপাতে সার বেঁধে বসে হাতপাখায় বাতাস করছেন, কেউ বা ছাদ বা গাছের নিচে অপেক্ষায় রয়েছেন বিদ্যুতের জন্য।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) ও রবিবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানী ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এই চিত্র দেখা যায়।
আশুলিয়ার শিল্প-কারখানা, দোকানপাট ও আবাসিক এলাকাগুলোতেও একই অবস্থা। বিদ্যুৎ না থাকায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, ফলে আর্থিক ক্ষতি বাড়ছে। পানির সংকটও দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতিদিন তিন থেকে চারবার বিদ্যুৎ চলে যায়। প্রতিবার দুই ঘণ্টা করে ৮-৯ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎহীন থাকতে হয়। আবার গভীর রাতেও দুই থেকে তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। ফলে ঘরে থাকা ও ঘুমানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বিদ্যুতের পাশাপাশি গ্যাস ও পানির সংকটও তীব্র আকার ধারণ করেছে।
বিশেষ করে বাইপাইল, বগাবাড়ী, ইউনিক, জামগড়া, ছয়তলা, সরকার মার্কেট, নরসিংহপুর, মানিকগঞ্জপাড়া, ঘোষবাগ, ঘোরাট, জিরাবো, বাগানবাড়ী এলাকায় লোডশেডিংয়ের মাত্রা আরও বেশি।
ঘনঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, দিনে ১০-১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকলেও বিল কমছে না, বরং বেড়েছে। সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ডলার সংকটে গ্যাস, কয়লা ও জ্বালানি তেল আমদানি ব্যাহত হওয়ায় চাহিদামাফিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও মাস দুয়েক সময় লাগবে বলে তারা জানিয়েছেন।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘বিদ্যুতের সরবরাহ তুলনামূলকভাবে স্বাভাবিক রাখতে হলে আমাদের তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ওপর বেশি নির্ভর করতে হবে, যদিও এগুলোর উৎপাদন ব্যয় অনেক বেশি।’
তিনি আরও বলেন, 'এবার শহর ও গ্রামের মধ্যে সুষমভাবে লোডশেডিং ভাগ করা হবে। রাজধানীকে অগ্রাধিকার দেওয়ার নীতি এবার প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।'
What's Your Reaction?






