কিশোরগঞ্জে আগুনে ১২টি দোকান পুড়ে ছাই, প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ক্ষতি
রাতে দোকান বন্ধ করে বাসায় গিয়ে ঘুমিয়েছি, হঠাৎ মধ্যরাতে একজন কল দিয়ে জানান আমার দোকানে আগুন লেগেছে। বাসা থেকে দৌড়ে এসে দেখি আমার চারটি দোকানে দাউ দাউ করে আগুন জ¦লছে। চোখের সামনে নিমেষেই পুড়ে ছাই হলো চারটি দোকানে থাকা প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকার মালামাল। কান্নাজড়িত কন্ঠে আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছেন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে কালিকাপুর চৌধুরী পাড়ার শামীম নিউ মার্কেটের ক্ষতিগ্রস্ত কীটনাশক ও সার ব্যবসায়ী মাহফুজার রহমান।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বৈদ্যুতিক শর্ট-সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এতে ১২টি দোকানের মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় প্রায় ৬০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান মার্কেটের মালিক মতিয়ার রহমান।
বুধবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গতকাল রাতে ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে বাড়িতে চলে যায়। পরে মধ্যেরাতে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হয়ে তা মুহুর্তের মধ্যে ছড়িয়ে যায়। আশপাশের লোকজন আগুনের ধোঁয়া দেখে চিৎকার করলে স্থানীয়রা ছুটে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন তবে ততক্ষণে আগুনের লেলিহান শিখা চারিদিকে ছড়িয়ে পরে। স্থানীয়রা কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা প্রায় আধা ঘন্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আগুনে পুড়ে যাওয়ার মধ্যে মোবাইলের দোকান, সার ও কীটনাশক, মুদিদোকানসহ ১২ টি দোকান ছিল। আগুনে ব্যবসায়ীদের সবকিছু পুড়ে ছাই গেছে।
কীটনাশক ব্যবসায়ী মাহফুজার রহমান আরও বলেন, আমার এই দোকান করে আমার ছেলে মেয়ের পড়ালেখার খরচ ও সংসার চালাই। ব্যবসায় আমার তেমন কোন পুঁজি নেই, আমি বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা লোন নিয়ে এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছি। গতকাল রাতের আগুনে আমার সবকিছু পুড়ে যাওয়ায় আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। এখন আমি কিভাবে জীবিকা নির্বাহ করবো, কিভাবে ব্যাংক লোন পরিশোধ করবো।
মুদি দোকানি আমিনুর রহমান বলেন, গতকাল রাতে আমি দোকান পরিস্কার করে বন্ধ করে বাড়িতে চলে যাই। আমার ভাগিনা আমাকে কল দিয়ে জানায় আমার দোকানে আগুনে লেগেছে। ঘুম থেকে উঠে এসে দেখি আমার দোকানে আগুন লেগেছে, দোকানের সার্টার খুলতেই দেখি ফ্রিজসহ সব মালামাল পুড়ে গেছে। আমার দোকান পুড়ে যাওয়ায় আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম। দোকান না চললে পেটে ভাত যায় না, দোকান পুড়ে গেলো এখন কি খাব।
ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (স্টেশন অফিসার) মহরম আলী বলেন, গতকাল রাতে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ১২ টি দোকান পুড়ে গেছে। সেখানে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় আধা ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমি হক বলেন, আমি শুনেছি আগুনে ১২ টি দোকান পুড়ে গেছে। ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা করার সুযোগ থাকলে সেটি করা হবে।
What's Your Reaction?