কৃষক-কৃষাণীদের মাঝে আলো ছড়াচ্ছে পার্টনার ফিল্ড স্কুল
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে বাড়ীর আঙিনায়ই পরিচালিত হচ্ছে পার্টনার ফিল্ড স্কুলের কার্যক্রম। বই-খাতা নিয়ে এসব স্কুলে পড়ছে গ্রামাঞ্চলের প্রান্তিক কৃষক-কৃষাণীরা।
উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের বহরপুর উত্তরপাড়া গ্রামে ১৫ জন পুরুষ ও ১০ জন নারী সহ ২৫ জন কৃষক কৃষাণী নিমগ্ন হয়ে শুনছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আালাউদ্দিন সরদার ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুর রহমানের কথা। স্কুলে আসা নানা বয়সের এসব নারীরা কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু সবাই এখানে ‘স্কুলছাত্রী,। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চেয়ার- টেবিল ছাড়া এ স্কুলে শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে শেখানো হচ্ছে কীভাবে আধুনিক উপায়ে রোপা আমন ধান চাষ করা যায়। তার রোগ ও পোকা-মাকড় ব্যবস্থাপনা, সার ও পানি ব্যবস্থাপনা, উপকারী-অপকারী পোকা সম্পর্কে মোট কথা বীজ হতে পনুরায় বীজ প্রাপ্তিতে যত আধুনিক উপায় আছে সবকিছু হাতে কলমে শেখানো হচ্ছে।
পার্টনার ফিল্ড স্কুলের ছাত্র কৃষকরা বলেন, এ স্কুলে পড়ে তারা অনেক কিছুই শিখতে পারছেন। জমিতে সঠিক মাত্রায় সার, সঠিক সময়ে জমিতে পানি রাখার গুরুত্ব, সঠিক পদ্ধতিতে বালাইনাশকের ব্যবহার, আইপিএম পদ্ধতিতে পোকা দমনসহ এ স্কুলে পড়ে তারা অনেক কিছুই শিখতে পারছেন।
বহরপুর ইউনিয়নের বহরপুর ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দিন সরদার বলেন, পার্টনার স্কুলে পড়ে কৃষকরা কৃষি ও পারিবারিক পুষ্টি বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে নারীরা হাতে কলমে এ শিক্ষা গ্রহণ করে সংসারে সন্তান লালন-পালন ও পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা মিটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারছেন।
বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, এটি পার্টনার প্রকল্পের রোপা আমন ধানের একটি পার্টনার ফিল্ড স্কুল। এ স্কুলে ধানের সময় উপযোগী সেশন পরিচালনার মাধ্যমে কৃষকদের বাস্তব ও হাতে কলমে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়। যার মাধ্যমে কৃষকরা কৃষির আরও আধুনিক, বানিজ্যিক ও স্মার্ট কৃষিতে রূপান্তর করতে পারবে বলে মনে করছি। এসব স্কুলে শিক্ষা নিয়ে ফসলের রোগবালাই দমন, উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা মিটাতে ভূমিকা রাখতে পারছেন তারা। বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফর্মেশন ফর নিউট্রিশন এন্টারপ্রেনরশিপ অ্যান্ড রিসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ পার্টনার প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে ‘পার্টনার ফিল্ড স্কুল’ নামে এসব স্কুল। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পরিচালিত প্রতিটি স্কুলে ১০ জন নারী ও ১৫ জন পুরুষ মোট ২৫ জন কৃষক-কৃষাণী সপ্তাহে একদিন করে ১০টি সেশনে ক্লাস করেন। উপজেলা কৃষি অফিসার ও এসএপিপিও সহায়তাকারী হিসেবে এবং সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আয়োজনকারী হিসেবে এ স্কুলের সেশন স্কুল পরিচালনা করেন।
What's Your Reaction?