খাবারে বিষ মিশিয়ে স্বামীকে হত্যা, স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ

এমএ কাইয়ুম, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, মুন্সীগঞ্জঃ
Apr 18, 2025 - 16:25
 0  4
খাবারে বিষ মিশিয়ে স্বামীকে হত্যা, স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ

রাতের খাবারে ছিল বিষ, কিছুক্ষণের মধ্যেই নিস্তেজ হয়ে পড়েন স্বামী। এরপর আর ফেরা হয়নি তার—চিরবিদায় নেন ঘুমের মধ্যেই। মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে স্ত্রীর বিরুদ্ধে খাবারে বিষ মিশিয়ে স্বামীকে হত্যার এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে।

পরিবারের দাবি, স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্কই এই হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ। নিহত মো. মতিন চোকদার (৩৪) খুলনার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। তিনি সিরাজদিখান উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের রড় শিকারপুর গ্রামের মৃত নূরুল ইসলাম চোকদারের ছেলে।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মতিন চোকদারের স্ত্রী শাহিদা আক্তারের সঙ্গে সিরাজদিখানের বড়ইহাজী আশরাফুল উলুম ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার শিক্ষক মো. মাজহারুল ইসলামের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে কলহ চলছিল।

গত রবিবার (৬ এপ্রিল) রাতে খুলনা থেকে ছুটিতে বাড়ি ফেরেন মতিন। সেদিন রাতের খাবারে ভাত ও ফিন্নি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। পরিবারের সদস্যরা জানান, খাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই পেটে ও বুকে যন্ত্রণা শুরু হয় তার। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি নিস্তেজ হয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিষয়টি টের পেয়ে তাকে দ্রুত সিরাজদিখানের নিমতলা জনসেবা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

পরিবারের অভিযোগ, স্ত্রী শাহিদা আক্তার ইচ্ছাকৃতভাবে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাকে হত্যা করেছেন।

নিহতের ভাই মো. শাহ আলম চোকদার, মো. বোরহান চোকদার ও মো. নাদিম চোকদার জানান, মতিন চোকদার দীর্ঘদিন খুলনায় কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি এলাকায় ফিরে আসার পর স্ত্রী শাহিদা আক্তারের সঙ্গে ওই শিক্ষকের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে দাম্পত্য কলহ তীব্র আকার ধারণ করে। একপর্যায়ে শাহিদা বাবার বাড়ি চলে যান। তবে ঘটনার দুই দিন আগে তাকে আবারও বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়।

ঘটনার পাঁচ দিন পর, শুক্রবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে সিরাজদিখান থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন নিহতের মা আমেলা বেগম। তবে অজ্ঞাত কারণে তাৎক্ষণিকভাবে মামলা গ্রহণ করা হয়নি।

এ বিষয়ে সিরাজদিখান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহেদ আলম মামুন বলেন, “নিহতের পরিবার হত্যার অভিযোগ এনেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে লাশ ইতোমধ্যে দাফন হয়ে গেছে, যা তদন্তে কিছুটা সীমাবদ্ধতা তৈরি করেছে।”

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow