চট্টগ্রামে জাহাজ ভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা দিবস পালন

মো: সিরাজুল মনির,চট্রগ্রাম ব্যুরো
Apr 28, 2024 - 19:15
 0  15
চট্টগ্রামে জাহাজ ভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা দিবস পালন

২৮ এপ্রিল জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা দিবস। বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে ২০১৬ সাল থেকে দিবসটি পালন করছে। কর্মক্ষেত্রে দূর্ঘটনার শিকার, আহত বা নিহত শ্রমিকদের স্মরণে দিবসটি  প্রতি বছর পালন করা হয়। এই উপল্কখে জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের উদ্যোগে আজ বিকাল ৪টায় সীতাকুন্ডস্থ কদম রসুলে এক মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জাহাজভাঙা শ্রমিকনেতা মোঃ জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত মানব বন্ধন ও সমাবেশে বক্তৃতা করেন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র চট্টগ্রাম জেলা যুগ্ম সম্পাদক ইফতেখার কামাল খান, টিইউসি কেন্দ্রীয় সংগঠক ফজলুল কবির মিন্টু, টিইউসিনেতা মাহাবুব চৌধুরী, বেসরকারী স্বস্থ্য প্রতিষ্ঠান কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুর রহিম, হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ হানিফ, ইনসাব চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি আব্দুর শুক্কুর, সাধারণ সম্পাদক মহিন উদ্দিন, টিইউসি নেতা মোঃ রাশেদ, জাহাজভাঙা শ্রমিকনেতা মোঃ ইকবাল, মোঃ সবুজ হোসেন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। 

সভায় বলা হয়, কর্মক্ষেত্রে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সুবিধা প্রতিটি শ্রমিকের বৈধ এবং আইনগত অধিকার। শ্রমিকদেরকে একটি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর কর্ম পরিবেশ প্রদান করা এবং কর্মক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পেশাগত স্বাস্থ্য এবং নিরাপদ পরিবেশের অনুশীলন করা প্রত্যেক মালিকের নৈতিক ও আইনগত কর্তব্য। 
নেতৃবৃন্দ বলেন, নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্যয়ের প্রতি মালিকপক্ষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্যয় মূলত মূলধনী খরচ বা বিনিয়োগ। নিরাপদ কর্ম পরিবেশ শুধু শ্রমিকের জীবন বাঁচায় না উৎপাদন ক্ষমতাও বাড়ায়। ফলে নিরাপত্তার জন্য যে কোন ধরনের খরচ বা বিনিয়োগ, দীর্ঘমেয়াদে শিল্পেরই লাভ।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, জাহাজভাঙা শিল্প সেক্টরে বর্তমানে ৪টি গ্রীন শীপ ব্রেকিং ইয়ার্ড প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আরো একাধিক শীপ ব্রেকিং ইয়ার্ড গ্রীন শীপ ব্রেকিং ইয়ার্ড হিসাবে স্বীকৃতি লাভের অপেক্ষায় আছে। ফলে এই সেক্টরে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে পূর্বের তুলনায় উন্নতি হচ্ছে। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, এই সেক্টরে বিগত ২ বছর মৃত্যুর হার কমেছে। চলতি বছরে একজনেরও মৃত্যু হয়নি। এটা নিঃসন্দেহে শুভ লক্ষণ। তবে জাহাজভাঙা শিল্প সেক্টরে শ্রমিকদের জীবনমান ও নিশ্চিতকল্পে আরো ব্যাপক কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এই ব্যাপারে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল তদারকি সংস্থাকে যথাযথ দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকতে হবে।
শ্রমিকনেতৃবৃন্দ, কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি জীবনমান উন্নয়নে ন্যায়সংসঙ্গত মজুরি পাওয়া, শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র প্রদান, সবেতন ছুটি ইত্যদির বাস্তবায়নও খুব জরুরি। তারা ২০১৮ সালে জাহাজভাঙা শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত নিম্নতম মজুরি অদ্যাবদি বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। 
সমাবেশে আরো বলা হয় একদিকে জাহাজভাঙা শ্রমিকদের মজুরি খুবই অপ্রতুল অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষের দাম বৃদ্ধিতে এই সেক্টরের শ্রমিকদের জীবনধারণ কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায়  শ্রমিকদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের চাহিদা মিটানোর লক্ষ্যে সকল শ্রমিকদের জন্য অবিলম্বে ন্যায্য মুল্যে রেশনিং ব্যবস্থা প্রবর্তন এখন সময়ের দাবিতে পরিনত হয়েছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow