চট্টগ্রামে তীব্র গরমে বেশি ভোগান্তিকে দিনমজুর রিক্সা চালক এবং হতদরিদ্ররা

মো: সিরাজুল মনির,চট্রগ্রাম ব্যুরো
Apr 24, 2024 - 13:23
 0  10
চট্টগ্রামে তীব্র গরমে বেশি ভোগান্তিকে দিনমজুর রিক্সা চালক এবং হতদরিদ্ররা

প্রচন্ড গরমে অসহ্য জনজীবন। বেশি ভোগান্তিতে রিক্সা চালক-দিনমজুর সহ হতদরিদ্ররা। একদিকে পরিবার, অন্যদিকে প্রচন্ড গরম। মনের জোরে পরিবারের জন্য ঘর থেকে বের হলেও হার মানতে হচ্ছে সূর্যের তাপে। বেশিক্ষন চলছেনা তাদের ক্লান্ত শরীর। কাজের ফাঁকে একটু স্বস্থির জন্য আশ্রয় নিচ্ছে গাছের ছায়ায়। অনেকে ফুটপাতে বিক্রি করা বরফ আর রং মেশানো শবরত খাচ্ছেন। কিন্তু এসব পানীয় অস্বাস্থ্যকর বলছেন বিশেষজ্ঞরা। 

তারা বলছেন, এই গরমে একটু সর্তক না হলে রয়েছে হিট স্ট্রোক  ডায়রিয়া ও জন্ডিস সহ নানা রোগের আশংকা। ইতিমধ্যে সরকারি হাসপাতালগুলোতে গরম জনিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে ।

নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় ছায়ায় বসে বিশ্রাম নেওয়া রিক্সা চালক জাফর আলম জানান, ‘অসহ্য গরমে একটি জিরিয়ে নিচ্ছি। একটা ভাড়াও নিতে পারছিনা, আরেকটা নেওয়ার শক্তি নাই। এদিকে রোজগার করতে না পারলে পরিবার খেতে পারবেনা। সন্ধ্যায় ঘরে চাল ছাড়া ফিরতে পারবনা। বউ-বাচ্চা না খেয়ে থাকবে। কি আর করার, আল্লাহ যতক্ষণ শক্তি দেয় ততক্ষণ রিক্সার প্যাডেল ঘুরাতে পারি।
দিনমজুন নুরুল আফসার  জানান, ‘চামড়া পোড়া গরম পড়ছে। এর পরেও পেটের দায়ে ঘর থেকে বের হতে হচ্ছে। কাজও তেমন মিলছেনা। এছাড়া বেশিক্ষন কাজ করতে পারছিনা। রোদের কারণে মাথা ঝিমঝিম করে। গরম সহ্য করতে না পেরে অনেকে অর্ধেক কাজ থেকে চলে আসে। জানিনা সামনের দিনগুলো কেমন যায়।

ফুটপাতে শরবত খাওয়া এক সিএনজি চালকের কাছে জানতে চাওয়া হয় এই শবরত স্বাস্থ্যসম্মত কিনা? উত্তরে তিনি বলেন, ‘কিছুই করার নেই। খুবই গরম লাগছে। এই বরফের শরবত খেয়ে একটু ঠান্ডা হচ্ছি। আমরা’ত আর দামি পানীয় খেতে পারবনা, তাই কম দামের এই ঠান্ডা খেয়ে বুকটা শীতল করছি।

চিকিৎসক বলছেন, এই গরমে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সর্তক না হলে ঘটতে পারে হিট স্ট্রোক, ডায়রিয়া-জন্ডিস সহ নানা রোগ বালাই। বাড়তি বিশুদ্ব পানি পান সহ নিরাপদে থাকা পরার্মশ দিচ্ছেন।
এই প্রসঙ্গে ডা. এমএ রউফ জানান, গরমে হিট স্ট্রোক প্রবণতা রয়েছে। এই ঝুঁকিতে বেশি রয়েছেন দিনমজুর বা খেটে খাওয়া লোকজন। তাদের একটানা কাজ করা কোনভাবেই উচিৎ নয়। কাজের ফাঁকে জিরিয়ে নিতে হবে। অনেককে দেখা যায়, ফুটপাতের অস্বাস্থ্যকর শরবত, মসলা বা তেলযুক্ত খাবার খেতে। যা ক্ষতিকর। এতে ডায়রিয়া-জন্ডিস সহ নানা রোগবালাইয়ের আশংকা রয়েছে। পানি ও খাবারের ব্যাপারে সর্তক থাকতে হবে। ছাতা ও বিশুদ্ধ পানি সাথে রাখতে হবে। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া উচিৎ নয়।

এদিকে অবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ ৩৬  ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এই তাপদাহ আরো কিছু দিন থাকবে। আগামী ৫-৭ দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা নেই। এছাড়া জলীয় বাস্পের আধিক্যের কারণে গরম বেশি অনুভব হচ্ছে। হালকা বাতাস থাকলেও তার তাপমাত্রার সাথে নিলে গরম হয়ে গেছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow