নওগাঁয় প্রকাশ্যে জনারণ্যে যুবককে কুপিয়ে গুরুতর জখম
নওগাঁ শহরের বালুডাঙ্গা বাস টার্মিনালে প্রকাশ্য জনারণ্যে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে সাজ্জাদ হোসেন (৩৫) নামে এক যুবককে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। তিনি পল্লী বিদ্যুতের একজন ঠিকাদার। গত রোববার (১৪ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১০টায় সংঘটিত এ ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় চাঞ্চল্য পড়ে যায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, মোশারফ হোসেন শান্ত নামে এক যুবকের নেতৃত্বে ১০-১২ জন যুবক ধারালো অস্ত্র হাতে ঠিকাদার সাজ্জাদের ওপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে সাজ্জাদের মাথায় কোপ দেয় শান্ত। এ সময় বাবাকে বাঁচাতে ছুটে যান সাজ্জাদের ছেলে হৃদয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হৃদয়কেও মারপিট করে শান্তর অনুসারীরা। এসময় এলাকায় এক ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। অসংখ্য মানুষের উপস্থিতিতে এ লোমহর্ষক হামলা চালানো হলেও ভয়ে কেউ আক্রান্তকে বাঁচাতে এগিয়ে যাননি।
এ ঘটনার পর শহরজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গা ঢাকা দিয়েছে মোশাররফ হোসেন শান্ত ও তার অনুসারীরা। কীভাবে এই ঘটনার সূত্রপাত তা জানতে ঘটনাস্থলে গেলে সেখানে কথা হয় প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে। স্থানীয়রা জানান, বাসস্ট্যান্ডে সোহরাওয়ার্দী নামে একটি মুদিখানার দোকানিকে রাতে আকস্মিক কল দিয়ে হাত পা ভেঙে ফেলার হুমকি দেয় শান্ত। এর কিছুক্ষণ পর ওই দোকানে গিয়ে সোহরাওয়ার্দীকে মারপিট শুরু করেন শান্ত ও তার অনুসারীরা।
আহত সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘নববর্ষের দিন স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে ঘুরাঘুরি শেষে বাড়িতে ফিরছিলাম। ফেরার পথে স্ত্রীকে পাঠিয়ে দিয়ে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে নেমে যাই। পথে শান্ত আমার পথরোধ করে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ১০-১২ জনের প্রত্যেকের হাতেই ধারালো অস্ত্র ছিল। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমার শরীরে বিভিন্ন স্থানে কোপাতে থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে বাঁচাতে এলে আমার ছেলেকেও তারা বেদম মারপিট করেছে। অনেক আকুতি করেও লাভ হয়নি। শান্ত বাহিনীর অত্যাচারে আমাদের পুরো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আমরা অতিষ্ঠ। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় শান্ত কাওকেই তোয়াক্কা করেন না। এ ঘটনায় থানায় মামলা করলে আমাকে হত্যা করবে বলে এখনো হুমকি দিয়ে যাচ্ছে শান্ত বাহিনীর সন্ত্রাসীরা।
নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুল হক বলেন, এ ঘটনায় কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখে অস্ত্রধারীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে।
What's Your Reaction?