নওগাঁয় স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি
Apr 22, 2024 - 17:53
 0  6
নওগাঁয় স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

নওগাঁর নিয়ামতপুরে স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামী সালাউদ্দিন ওরফে টনির (৩৫) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকার অর্থদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে নওগাঁ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ এ রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আব্দুল খালেক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে নিয়ামতপুর উপজেলার ধানসা গ্রামের আবু কালামের মেয়ে তুকাজ্জেবার (২৪) সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের সালাউদ্দিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। ২০২০ সালের ২৯ জুন স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়ি নিয়ামতপুরের ধানসা গ্রামে বেড়াতে আসেন ওই নারী। পারিবারিক কলহের জেরে শ্বশুরবাড়িতে থাকা অবস্থায় ১ জুলাই সালাউদ্দিন তার স্ত্রী তুকাজ্জেবার গলায় কাঁচি দিয়ে খুঁচিয়ে গুরুতরভাবে জখম করে। ওই দিন ভোর সাড়ে ৫টার দিকে চিৎকারের শব্দ পেয়ে ভুক্তভোগীর বাবা ও মা  বাইরে থেকে ঘরের দরজা খোলার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে প্রতিবেশী রবিউল ইসলাম লাথি মেরে দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে তুকাজ্জেবাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় সালাউদ্দিনের হাতে কাপড় কাটার কাঁচি দেখতে পান। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন স্বামীকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
এ ঘটনায় নিহত তুকাজ্জেবার বাবা আবু কালাম বাদীয় হয়ে ঘাতকের বিরুদ্ধে নিয়ামতপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে  মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা ২০২২ সালের ২২ জুন আদালতে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন। রাষ্ট্রপক্ষের মোট ১৮ সাক্ষীর মধ্যে আদালতে ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের দীর্ঘ সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন। একই সঙ্গে তাঁকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow