নবীনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি ও সার্টিফিকেট বাণিজ্য: প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ

কাউসার আহমদ,নবীনগর(ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
Jan 29, 2025 - 19:08
 0  4
নবীনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি ও সার্টিফিকেট বাণিজ্য: প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পূর্ব ইউনিয়নের ডোপাকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণিতে ভর্তি ও পঞ্চম শ্রেণির সার্টিফিকেট প্রদানের নামে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান খানের বিরুদ্ধে। অভিভাবকদের দাবি, শিশু শ্রেণিতে ভর্তির জন্য ৫০ টাকা এবং পঞ্চম শ্রেণির সার্টিফিকেটের জন্য ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে তাদের।

এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে সরেজমিনে। স্কুলের দুই শিক্ষার্থী মায়া বিনতে মনি ও ফাতেমা আক্তার জোহরা জানিয়েছেন, তাঁরা পঞ্চম শ্রেণির সার্টিফিকেটের জন্য ২৫০ টাকা করে প্রদান করেছেন। স্বপ্নাহার বেগম নামে এক অভিভাবক জানান, তার মেয়ের সার্টিফিকেটের জন্য ২০০ টাকা দিতে হয়েছে।পারভীন নামে আরেক অভিভাবক অভিযোগ করেন, তার দুই মেয়ের ভর্তির জন্য ১০০ টাকা দাবি করেছিলেন প্রধান শিক্ষক। আমিন মিয়া নামে এক ব্যক্তি জানান, তার নাতির শিশু শ্রেণিতে ভর্তির সময় ৫০ টাকা দিতে হয়েছে।

শিক্ষার মান নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। সাইমন নামে একজন জানান, শিক্ষকরা দেরিতে স্কুলে আসেন এবং দুপুর দুইটার দিকে চলে যান, যার ফলে শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো পাঠদান পাচ্ছে না। স্কুলের সাবেক ছাত্র মোস্তফা কামাল জানান, স্কুলটি ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০১৩ সালে সরকারিকরণ করা হয় এবং হাবিবুর রহমান ২০১৮ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি অভিযোগ করেন, গত ৭-৮ বছর ধরে স্কুলের শিক্ষার মান ক্রমশ অবনতি হচ্ছে এবং শিক্ষকরা ঠিকমতো ক্লাস করান না। আরো একজন সাবেক ছাত্র সাব্বির আহমেদ জানান, কিছু শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে একই স্কুলে কাজ করলেও শিক্ষার মান উন্নয়নে কোনো ভূমিকা রাখেন না। তিনি দাবি করেন, পঞ্চম শ্রেণির অনেক শিক্ষার্থী নিজের নাম লিখতে পারে না। এহসানুল হক মিলন নামে একজন অভিযোগ করেন, পরীক্ষায় শিক্ষকরা ব্ল্যাকবোর্ডে উত্তর লিখে দেন পাশের হার বাড়ানোর জন্য।

প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান খান অভিযোগ আংশিক স্বীকার করে জানান, তিনি ভর্তি ফরম ও শিক্ষা সামগ্রীর জন্য অর্থ নিয়েছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের অনিয়মিত উপস্থিতির জন্য সিলেবাস শেষ করতে না পারার দোহাই দেন। তিনি আরও জানান, ব্যক্তিগত ও অফিসিয়াল কাজের জন্য তিনি ঠিক সময়ে স্কুলে আসতে পারেন না।

নবীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. মনসূর আহামেদ জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি ও শিক্ষা বিনামূল্যে। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow