প্রশ্নবিদ্ধ দেশের ব্যাংকিং খাত, এর জন্য প্রধানত দায়ী দেশের বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান গুলো
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চালিকা শক্তির অনেকটা যোগান দিয়ে থাকে ব্যাংকিং খাত। গ্রাহকের জমানো ঢাকা থেকে ব্যাংকের আয় করা লভ্যাংশ থেকে দেশের রাজস্ব বাড়ানোসহ অন্যান্য উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করা হয় কিন্তু সেই ব্যাংকিং খাত যখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যায় দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড থমকে যায় ।
বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো কিছু শিল্প গ্রুপের হাতে চলে যাওয়ায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা অনিয়মে পরিণত হয়েছে । ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সকলে এই বিষয়ে মুখ না খুললেও ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ অবস্থা খুবই খারাপ। দেশের কয়েকটা শিল্প গ্রুপ বড় কিছু ব্যাংককে সরাসরি তাদের আয়ত্তে রেখে দেওয়ায় এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে । ব্যাংকিং কর্মকান্ড বুঝেনা এরকম কিছু ব্যবসায়ী পরিচালক পদে আসীন হওয়ায় সকল কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে গ্রাহকদের মাঝে । তার উপরে রয়েছে ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগে স্বজন প্রীতি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম না মেনে কিছু কিছু ব্যাংকে পরিচালনা পর্ষদের সরাসরি অনুরোধে কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম হয় । এতে সঠিক কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগ না করায় ব্যাংকের শাখা সমূহ পরিচালনায় অনেকটা বেগ পেতে হয় শাখা ব্যবস্থাপকদের।
ইসলামি ধারার মূল ব্যাংকগুলো থেকে গ্রাহকের জমাকৃত টাকা শিল্প গ্রুপগুলো তুলে ফেলায় গ্রাহকদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এতে গ্রাহকরা চিন্তায় পড়ে গেছে আসলেই কি তাদের জমাকৃত টাকা ফেরত পাবে । তার উপরে রয়েছে দেশের বাইরে টাকা পাচার । দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীরা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে যুক্ত হয়ে দেশের বাইরে টাকা পাচার অব্যাহত রাখার কারণে শীর্ষস্থান নিয়ে কিছু ব্যাংক থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে । কোন ব্যাংককে বিশ্বাস করতে চাচ্ছে না গ্রাহকরা।
কিছু কিছু শাখা ব্যবস্থাপক হতাশ হয়ে বলেন মূলধারার ব্যবসায়ী এবং ব্যাংক বোোঝে এ ধরনের লোকজন পরিচালনা পর্ষদের না আসায় অতিরিক্ত মুনাফা কিছু ব্যবসায়ী পরিচালনা পর্ষদে যুক্ত হয় বিভিন্ন প্রকারের জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে । কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে স্বজনপ্রীতি করায় উপযুক্ত কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগ না পাওয়ায় শাখা গুলোতে সঠিকভাবে কাজ সম্পাদন করা যাচ্ছে না।
রাতারাতি ব্যাংকের মালিক বনে যাওয়া কিছু ব্যবসায়ী বিনাশর্তে লোন প্রদান করার জন্য উৎসাহিত করায় ঋণ খেলাপির সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। পরিচালনা পর্ষদের অনেকটা চাপের কারণে ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করাতে কেউ বিরত থাকে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকগুলো থেকে এতে করে সঠিক জায়গায় সঠিকভাবে ব্যাংকের টাকা ব্যবহার না হওয়ায় বড় বড় ব্যাংকগুলোতে অলস টাকা পড়ে থাকে। কিছু কিছু ব্যাংক গ্রাহকের ফিক্স ডিপোজিট সময় মত প্রদান না করার কারণে এবং তাদের জমানো টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে ব্যাংকের শাখা সমূহ দেরি করার কারণে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে গ্রাহকরা ।
গ্রাহকদের অভিযোগ শিল্প গ্রুপগুলো গ্রাহকদের জমানো টাকা তুলে তাদের ব্যবসায় কাজে লাগানোর ফলে যত সময়ে টাকা ফেরত পাওয়া যাচ্ছে না।
এখনই এর সুষ্ঠু সমাধান না করলে আগামী কিছুদিনের মধ্যে দেশের ব্যাংকিং খাত ধ্বংস হয়ে যেতে পারে বলে অনেকের ধারণা। প্রবাসীরা আবারো ঢুকে যাচ্ছে হুন্ডিতে।
এর মধ্যে ব্যাংকিং খাতে আরেকটি বড় দুঃসংবাদ হল একটি ব্যাংক আর একটি ব্যাংকের সাথে একিভূতকরণ মানে দুর্বল ব্যাংকগুলো সবল ব্যাংকগুলোর সাথে ব্যবসা শুরু করবে যার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে কয়েকটি ব্যাংক দিয়ে শুরু হয়ে গেছে। এর প্রভাবটা পড়ে গেছে গ্রাহকদের মাঝে ব্যাংকের একীভূতকরণে গ্রাহকরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আতঙ্কিত হয়ে তারা বলতে চাচ্ছে তাদের জমানো আমানত গুলো ক্রমান্বয়ে নিরাপত্তার বাইরে চলে যাচ্ছে যার থেকে উত্তরণের কোন উপায় দেখছে না ব্যাংকের সাধারণ গ্রাহক।
গ্রাহকদের অভিযোগ সরকার যেনতেন লোকজনকে অনেকটা রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংকের মালিকানার অনুমোদন দিয়ে বিশাল ভুল করেছে আগামীতে ব্যাংকের মালিকানা দেয়ার সময় উপযুক্ত ব্যক্তিকে মনোনীত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে, ছোট একটা দেশে এত ব্যাংক অনুমোদন দেয়াকে কেউ ভালোভাবে নিচ্ছে না।
What's Your Reaction?