ফরিদপুরে সংবাদপত্র জগতের কলঙ্কিত একটি নাম সাঈদ আলী নান্নু

বিশেষ,প্রতিনিধি
Sep 23, 2024 - 20:15
Sep 23, 2024 - 20:16
 0  38
ফরিদপুরে সংবাদপত্র জগতের কলঙ্কিত একটি নাম সাঈদ আলী নান্নু
ফরিদপুরে সংবাদপত্র জগতের কলঙ্কিত একটি নাম সাঈদ আলী নান্নু
ফরিদপুরে সংবাদপত্র জগতের কলঙ্কিত একটি নাম সাঈদ আলী নান্নু। যিনি ঢাকা থেকে নিয়মিত ও অনিয়মিত প্রকাশিত কয়েকটি পত্রিকার প্রতিনিধি পরিচয়ে দাপিয়ে বেড়ান পুরো ফরিদপুর। তার সম্পর্কে অভিযোগ রয়েছে তিনি যেসমস্ত পত্রিকার পরিচয় দেন সেগুলো ঢাকার পত্রিকা হলেও বিজ্ঞাপনের পুরো টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্য নিজেই সে সমস্ত পত্রিকার কয়েকটি কপি ছেপে আনেন। এছাড়াও তিনি দৈনিক ফরিদপুর নামের একটি পত্রিকার সম্পাদক/প্রকাশক ও বটে। যা সরকারি মিডিয়াভূক্ত। ডিএফপির নীতিমালা অনুযায়ী জেলা শহরের মিডিয়াভূক্ত পত্রিকা গুলোকে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩ হাজার কপি পত্রিকা প্রকাশ করতে হয়। অথচ এই সাঈদ আলী নান্নু ৩ হাজার কপি নয়, প্রতিদিন ৩০ কপি পত্রিকাও প্রকাশ করেন না। তিনি মিডিয়ার দোহাই দিয়ে বিভিন্ন দপ্তরের বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করে কেবল মাত্র বিজ্ঞাপন প্রকাশের দিনই পত্রিকা প্রিন্ট করেন এমন অভিযোগই পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় তার সম্পাদিত দৈনিক ফরিদপুর কিভাবে মিডিয়াভূক্ত থাকে তা এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। 
বিভিন্ন অভিযোগে জানা গেছে, এই সাঈদ আলী দীর্ঘদিন ধরে নিরবে নিভৃতে বিভিন্ন নামে-বেনামে প্রতারণা করে আসছেন। এছাড়াও জানাযায়, জেলার বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে হুমকি-ধমকি দিয়ে বিশেষ সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেন। এমনি একটি ঘটনার আলোকে এই সাঈদ আলী নান্নু একজন প্রতারক হিসেবে ফরিদপুর জেলার সাংবাদিক মহলের এখন বেশ পরিচিত। 
তার বাড়ি ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট মোল্লা বাড়ি সড়কে এবং স্থানীয় একটি পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক। মূলত তিনি দৈনিক ফরিদপুর  পত্রিকার পরিচয়ে এই প্রতারণা করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ফরিদপুরের অন্তত ১০/১২ জন হকার জানায়-তার পত্রিকা দেখেন নাই এবং চিনেন না। এই পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে প্রচার না করে বিজ্ঞাপনের বিল তুলে নিচ্ছেন। তাতে ক্ষতি হচ্ছে সরকারি রাজস্ব এবং প্রতারণার শিকার হচ্ছে জনসাধারন। 
অপরদিকে কিছু সরকারি অফিসে হুমকি দিয়ে বলে বেড়ায়- তার পত্রিকা ডিএফপিভূক্ত, বিজ্ঞাপন না দিলে তাদের চাকুরি থাকবে না। অথচ ডিএফপির নীতিমালা তিনি মানেননা। প্রতিদিন ৩ হাজার কপি প্রকাশের বিধান থাকলে তিনি ৩০ কপিও ছাপেননা।
অন্য দিকে গত ১লা সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং তারিখে ফরিদপুর বিভাগীয় প্রেসক্লাব নামের একটি প্যাডে শেখ আশরাফ উদ্দিন ও উপদেষ্টা পদ লিখে নির্বাহী প্রকৌশলী, এলজিইডি ফরিদপুর বরাবর একটি ভুয়া চিঠি লিখে বেআইনীভাবে হুমকি দেয় এই প্রতারক। 
ঘটনাটি জানাজানি হলে শেখ আশরাফ উদ্দিন নামে ওই ব্যক্তি প্রতিবাদ জানিয়ে এই প্রতারকের বিচারের দাবিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং তারিখে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এলজিডির নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর। এভাবে এই সাঈদ আলী নান্নু জেলার বিভিন্ন অফিসে নামে বেনামে ফোন করে ও হুমকি দিয়ে থাকেন বলে অনেকেই অভিযোগ করেন।
তার অপকর্মের আরেকটি উদাহরণ হলো- জাতীয় ‘দৈনিক খবর’ পত্রিকা নিজের গোপন জায়গা থেকে ছাপিয়ে নিজের নামে ব্যাংক একাউন্ট করে বিল তুলে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিগত দিনে এমন ঘটনায় ধরা খেয়ে সেই বিলের টাকা ফেরত দিয়ে অপমানের শিকার হয়েছেনও এবং সেই আলোচিত ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পেলেও থেমে নেই প্রতারক সাইদ আলী নান্নুর প্রতারণা।   
জানা যায়, কিছু অসাধু অফিস সহকারি ও ব্যাংক কর্মচারির যোগসাজসে এই সব অপকর্ম করে থাকেন এই সাইদ আলী নান্নু। যা গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করলেও বেরিয়ে আসবে সত্য ঘটনা। 
এ বিষয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক মাহবুবুল ইসলাম পিকুল বলেন, স্থানীয় পত্রিকা গুলো বিজ্ঞাপন পাবে সমবন্টন হারে। সেখানে যদি কেউ বিজ্ঞাপন নিয়ে নয়-ছয় করে তবে তা মেনে নেয়া যায়না। কারণ স্থানীয় পত্রিকা শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে বিজ্ঞাপন পত্রিকার একটি অপরিহার্য বিষয়। এছাড়াও ফরিদপুরে যারাই সাংবাদিকতার নামে ভুয়া প্রেসক্লাব সৃষ্টি করে প্রতারণার আশ্রয় নিবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে সাঈদ আলী নান্নুর ব্যবহৃত মোবাইলে কথা হলে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। ডিএফপির নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিদিন কমপক্ষে ৩ হাজার কপি পত্রিকা প্রকাশের বিধান থাকলেও আপনি তা করছেন না, এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি প্রতিবছর অডিটের দোহাই দিয়ে এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে বৃহত্তর ফরিদপুর সংবাদপত্র সম্পাদক পরিষদের সভাপতি আশিষ পোদ্দার বিমান বলেন,  সাইদ আলী নান্নু তার অনিয়মিত প্রকাশিত দৈনিক ফরিদপুর ও ঢাকার অনিয়মিত পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে  সংবাদপত্রের মান ধ্বংস করে দিচ্ছেন। এতে জনসাধারন যেমন প্রতারিত হচ্ছে অপর দিকে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow