বালিয়াকান্দিতে ভুয়া পশু চিকিৎসক-এ সয়লাব
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলাতে ভুয়া পশু চিকিৎসক-এ সয়লাব। মোটর সাইকেলের পিছনে ব্যাগ ঝুলিয়ে পশু চিকিৎসকের পরিচয় দিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাদের ছুটাছুটি চোখে পরার মতো। বাড়িতে পশু পালনের জন্য যুব উন্নয়নের কয়েক দিনের প্রশিক্ষণ নিয়ে আবার কেউ প্রশিক্ষণ ছাড়াই উপজেলা জুড়ে পশু চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এই সকল ভুয়া পশু চিকিৎসকরা। লিখছেন ব্যবস্থাপত্র, পুশ করছেন অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশনও।
অনেকেই মাধ্যমিকের গন্ডি না পেরোলেও বর্তমানে তার পরিচয় ডাক্তার।
এই সকল ভুয়া পশু চিকিৎসকরা প্রথমে পরিকল্পিত ভাবে গ্রামের সহজ সরল ছোট বড় খামারিদের কাছে উচ্চ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অভিজ্ঞ চিকিৎসক পরিচয় সহ স্বল্পমূল্যে চিকিৎসার আশ্বাস দিয়ে ফোন নাম্বার বিতরণ করে আসে। পরবর্তীতে পশুর সামান্য রোগে বড় বড় রোগের ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নেয় পর্যাপ্ত টাকা।
এই সকল ভুয়া পশু চিকিৎসকের রয়েছে সংঘবদ্ধ চক্র। ঔষধ কোম্পানী ও ভেটেনারি ফার্মেসির মালিকদের সাথে যোগসাজশে পশুর সামান্য রোগেও অতিরিক্ত ঔষধ লিখে পাঠানো হয় নির্দিষ্ট ঐসব ফার্মেসিতে। অপর দিকে এই সকল ভুয়া ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় কোন পশু মারা গেলে সবাই সংঘবদ্ধ ভাবে উল্টাপাল্টা বুঝিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়। এছাড়াও অনেক ক্ষেত্রে ভুল চিকিৎসার বিষয়টি সামনে আসলে স্থানীয় প্রভাবের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করে। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হয় ওই খামারি।
সরেজমিনে ঘুরে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, উপজেলার প্রায় শতাধিক এধরণের পশু চিকিৎসক রয়েছে। তারা বুঝে না বুঝে চিকিৎসা দিচ্ছে। যে কোন রোগে এন্টিবায়েটিক খাওয়ানোর পরামর্শ প্রদান করছে। এই ভাবে অতিরিক্ত এন্টিবায়েটিক খাওয়ানোর ফলে পশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কথা জানিয়েছে রেজিষ্টার চিকিৎসকগণ। এতে সেসব পশুর শরীরে সাধারণ ঔষধের কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে।
এদিকে স্থানীয় সচেতন মহল বলছে এই সকল পল্লী চিকিৎসকের কারণে খামারিদের উপকারের চেয়ে অপকার হয়। ভুল চিকিৎসার কারণে কোন খামারির পশু মারা গেলে অনেক সময় সে ক্ষতিপূরণও পায় না। এবিষয়ে খামারিদের স্বার্থে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল অ্যাক্ট ২০১৮ অনুযায়ী, যেকোনো প্রাণির ও পাখির লাইসেন্সবিহীন কেউ হাতুড়ে চিকিৎসা করলে তিন বছরের কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. প্রকাশ রঞ্জন বিশ্বাস মুঠোফোনে বলেন, আগেতো আইন ছিল না, ১৮ সালে বাংলাদেশ ভেটেনারি এক্ট এ আইন পাস হয়েছে। অভিযোগ পেলে আমরা এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
What's Your Reaction?