বিয়ের নামে প্রতারণা ও নারী নির্যাতনের অভিযোগ

মোঃ শামীম আহমেদ, আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি:
Mar 9, 2025 - 14:43
 0  16
বিয়ের নামে প্রতারণা ও নারী নির্যাতনের অভিযোগ

আশুলিয়ায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক নারীর সাথে দীর্ঘদিন ধরে দৈহিক সম্পর্ক রাখা এবং ৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে নূরুল আমিন নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী নারী ইতিমধ্যে আশুলিয়া থানায় এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

রবিবার (৮ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ওমর ফারুক অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, অভিযোগটি সংশ্লিষ্ট বিট অফিসার তদন্ত করবেন এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভুক্তভোগী নারীর গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলায়। অপরদিকে, অভিযুক্ত নূরুল আমিন আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের আমতলা এলাকার মো. ইয়ার উদ্দিন মাস্টারের ছেলে।

ভুক্তভোগী নারী জানান, প্রায় পাঁচ বছর আগে নূরুল আমিনের সাথে রং নাম্বারের মাধ্যমে পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে নূরুল আমিন তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাগেরহাট থেকে ঢাকায় নিয়ে আসে। আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া বাসায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তারা বসবাস করতে থাকে। এই সময়ে তারা প্রায় তিন বছর একসাথে থাকেন।

ভুক্তভোগী আরও জানান, নূরুল আমিন গাড়ির ব্যবসা করার কথা বলে তার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ধার হিসেবে নেয়। টাকা নেওয়ার পর নূরুল আমিন আত্মগোপনে চলে যায়। প্রায় পাঁচ বছর ধরে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

গত ৫ মার্চ ভুক্তভোগী নূরুল আমিনের সন্ধান পান। তিনি জানতে পারেন, নূরুল আমিন আশুলিয়ার গোহাইলবাড়ি বাজারে ব্যবসা করছেন এবং সেখানেই বসবাস করছেন। পরে ভুক্তভোগী নূরুলের সাথে দেখা করে তার পাওনা টাকা চান। তবে নূরুল আমিন টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং তাকে খুন করার হুমকি দেন। এছাড়া মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করারও হুমকি দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় কোনো সুরাহা না হওয়ায় ভুক্তভোগী নারী ৭ মার্চ রাতে আশুলিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নূরুল আমিন গোহাইলবাড়ি এলাকায় তার বাবার রেখে যাওয়া ধানের মিল ও ব্যাটারিচালিত অবৈধ অটোরিকশার ব্যবসা করেন। তিনি প্রায়ই মদ্যপ অবস্থায় থাকেন। এর আগেও তিনি গোহাইলবাড়ি বাজারের এক সিকিউরিটি গার্ডকে মারধর করেন। এছাড়া নারী নিয়ে নৌকায় অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত নূরুল আমিনের সাথে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। গোহাইলবাড়ি বাজারে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ওমর ফারুক বলেন, "অভিযোগটি তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট বিট অফিসারের কাছে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা নূরুল আমিনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, এ ধরনের প্রতারকদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, যাতে অন্য কেউ এ ধরনের প্রতারণার শিকার না হয়।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow