বোয়ালমারীতে বিএনপির পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল ১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা ও পৌর বিএনপির একাংশ ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম নাসির এর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করে। এর প্রতিবাদে উপজেলা ও পৌর বিএনপির অপর অংশ ২০ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় পৌরসভার কামারগ্রামে অবস্থিত উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সঞ্জয় কুমার সাহার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলন নিজেদের শহীদ জিয়ার আদর্শের প্রকৃত সৈনিক দাবি করে লিখিত বক্তব্য রাখেন
সম্প্রতি বিলুপ্ত ঘোষিত উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও গুনবহা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্য তিনি বলেন- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম)এর কতিপয় নেতৃবৃন্দ ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি, বারবার কারা নির্যাতিত নেতা খন্দকার নাসিরুল ইসলাম সম্পর্কে অশালীন, মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক তথ্য দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে। দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশনা অমান্য করে যারা দলের চরম দুর্দিনে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের বি-টিম হিসেবে দল গঠন করে গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছিল তারাই গতকাল সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তারা সকলেই বিএনএম-এর রাজনীতির সাথে জড়িত। ওই সংবাদ সম্মেলনকারি আওয়ামী লীগ সরকারের দেওয়া হয়রানি মূলক একটি বিস্ফোরক মামলায় থেকে বিএনএম-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ আবু জাফরকে দিয়ে তিনিসহ বিএনএমএর ২৫ নেতাকর্মীর নাম মামলার চার্জশিট থেকে বাদ দিয়েছেন। এতে প্রমাণিত হয় তিনি ও সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত সকলেই বিএনএম এর সদস্য, তারা বিএনপির কেউ নয়। খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বিএনপি করার অপরাধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদ সরকারের নির্দেশে তিনি কারারুদ্ধ ছিলেন। ফ্যাসিবাদ সরকারের পতনের পর ৭ আগস্ট খন্দকার নাসিরুল ইসলাম কারামুক্ত হন। তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে দীর্ঘদিন কারাবরণ করেছেন, অসংখ্য ভূয়া মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে হয়রানি করা হয়েছে। কথিত বিএনপি নেতা সৈয়দ টুটুল হোসেনের মারপিটের ঘটনায় খন্দকার নাসিরুল ইসলামে জড়িত থাকার কোনো প্রশ্নই আসে না, তিনি বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন।
সৈয়দ টুটুল হোসেন ও সৈয়দ হাবিবুর রহমানের উপর যে হামলা হয়েছে তার মামলায় স্পষ্ট প্রমাণিত হয় এর সাথে জড়িত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অথচ বিএনপির রাজনীতি ধ্বংসের মিশনে শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিকদেরও এ মামলায় জড়ানো হয়েছে। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সুসংগঠিত ফরিদপুর-১ আসনের বিএনপির রাজনীতিকে ধ্বংসের খেলায় নেমেছে বিএনএম এর সুবিধা ভোগী, প্রতারক ও বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত কতিপয় লোক। বর্তমানে তারা নিজেদের গা থেকে বিএনএমএর গন্ধ মুছে ফেলতে নিজেদের বিএনপির নেতাকর্মী হিসেবে জাহির করতে ব্যস্ত। তারা এখন খন্দকার নাসিরুল ইসলামের জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে তার ও বিএনপির নেতাকর্মীদের চরিত্রে মসীলিপ্ত কালিমা লেপনের চেষ্টা করে চলছে। সৈয়দ হাবিবুর রহমান চিহ্নিত মাদককারবারি তার বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন কী কোনো রাজনৈতিক নেতার পরিচয় বহন করে? এরা মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের দিয়ে প্রকৃত শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের ঘৃণ্য রাজনীতিতে নেমেছে। এদের প্রতিহত করে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে রক্ষা করা না গেলে দলীয়ভাবে চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। টুটুল ও হাবিবুরকে দিয়ে বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী নামে দেওয়া মিথ্যা মামলা করার তীব্র নিন্দা জানাই। এ মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন সম্প্রতি বিলুপ্ত ঘোষিত উপজেলা বিএনপি নেতা, বোয়ালমারী পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুস শুকুর শেখ, সাতৈর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার নাজিরুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি খান আতাউর রহমান, উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি সৈয়দ মাহবুবুর রশিদ হেলাল, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সঞ্জয় সাহা, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক জহুরুল হক ঠাকুর পিন্টু, পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রাসেল আহমেদ, পৌর স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক মো. মনির হোসেন, পৌর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিবুল ইসলাম, পৌর যুবদলের সদস্য সচিব মো. আল আমীন আহমেদ, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব বায়েজিদ খান রাব্বি প্রমুখ।
What's Your Reaction?