মিঠাপুকুরে মিথ্যা চুরির অপবাদ দিয়ে যুবকের হাত পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ
রংপুরের মিঠাপুকুরে মিথ্যা চুরির অপবাদ রটিয়ে এক যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে বুকের পাজোরের হাড় সহ হাত-পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক প্রবাসীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে মিঠাপুকুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই যুবকের পরিবার। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন প্রবাসী সহ অভিযুক্তরা।
শনিবার (২৭-জুলাই) দুপুর আনুমানিক ৪ ঘটিকার সময় লতিবপুর ইউনিয়নের বাতাসন দূর্গাপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার মিঠু মিয়া (৩০) একই গ্রামের মৃত- আব্দুল বাতেনের পুত্র। বর্তমানে সে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মূমুর্ষ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ০৭ লতিবপুর ইউনিয়নের বাতাসন দূর্গাপুর গ্রামের সৌদি প্রবাসী সাইদুর রহমান বাবু (৩৫) সৌদি আরব থেকে ছুটিতে এসে নিজের বাড়ি সংলগ্ন একটি গরুর খামার গড়ে তুলেন। নিজ বাড়ি থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে গরুর খামারে পানির পাম্প সহ খামারের সার্বিক বৈদ্যুতিক কাজ পরিচালনা করতেন। কিন্তু কয়েকদিন পূর্বে কে-বা-কাহারা খামারে দেয়া বিদ্যুৎ সংযোগের তার চুরি করে নিয়ে যায়। এরই সূত্র ধরে, শনিবার দুপুরে মিঠুকে চোর সন্দেহে আটক করে খামারে নিয়ে গিয়ে কুড়াল দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকে প্রবাসী বাবু। এসময় তাকে সহযোগিতা করেন, তার পিতা বদিয়ার রহমান এবং চাচাত ভাই সাইফুল ইসলাম।
এসময় অভিযুক্ত বাবু তার বাবা বদিয়ার রহমান এবং ভাই সাইফুল ইসলামের লোহার রডের আঘাতে মিঠুর পাজোরের হাড়, হাত পা এবং আঙ্গুল ভেঙে যায়। এমনকি বাবু কুড়াল দিয়ে মিঠুকে হত্যার উদ্দেশ্যে চোট মারলে মিঠুর হাতের আঙ্গুল কেটে যায়। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানান, মিঠুকে যেভাবে হাতপা এবং আঙ্গুল ভেঙে দেওয়া হয়েছে, মিঠু ভালো হলেও চিরজীবনের জন্য পঙ্গু হতে পারে। তাহমিনা বেগম নামে এক নারী জানান, ঘটনার সময় শতশত লোক চেয়ে থেকে দেখলেও বাবুর মারমুখী আচারনের কারনে কেউ এগিয়ে যাওয়ার সাহস পাননি।
মিঠুর বড় ভাই রুবেল জানান, মিঠু বিকারগস্ত ভবঘুরে এবং মাদকাসক্ত প্রকৃতির লোক। মিঠু চুরি করলে তাকে পুলিশে দেয়া উচিত ছিলো। কিন্তু তার হাত পা,বুকের পাজোর যেভাবে ভেঙেছে তাতে ভবিষ্যতে সে উঠে দাঁড়াতে পারবেনা। অভিযুক্ত বাবুর দাবি, খামারের তার হারার পর প্রতিবেশীরা জানায় মিঠু এই কাজ করেছে। কাজটা করা ঠিক হয়নি। প্রতিটা আঘাতে তার হাতপা ভেঙে যাবে আমি ধারণা করতে পারিনি। চিকিৎসা করাতে যা করা লাগে আমি তাই করবো।
মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, অভিযোগ পেয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
What's Your Reaction?