রোয়াংছড়িতে মাহা সাংগ্রাইং উৎসব শুরু

নতুন বছরকে বরণ এবং পুরোনো বছরকে বিদায় জানানোর মধ্য দিয়ে বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলায় শুরু হয়েছে পাহাড়ি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক উৎসব মাহা সাংগ্রাইং। রোববার (১৩ এপ্রিল) সাংগ্রাই উদযাপন কমিটির আয়োজনে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রার মাধ্যমে শুরু হয় সপ্তাহব্যাপী এই উৎসব।
মারমাদের সাংগ্রাইং, ত্রিপুরাদের বৈসু, চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যাদের ফুলবিজু মিলিয়ে সমগ্র পার্বত্যাঞ্চলে চলছে বৈসাবি উৎসবের উৎসবমুখর আয়োজন। রোয়াংছড়ির দুর্গম পাহাড়ি এলাকাগুলোতেও বইছে উৎসবের হাওয়া।
উৎসবের মূল আকর্ষণ জলকেলি বা পানি খেলা ও মৈত্রী জলবর্ষণ। এর পাশাপাশি রয়েছে ঐতিহ্যবাহী পিঠা তৈরি, বুদ্ধ প্রতিকৃতিকে স্নান করানো, ভিক্ষু সংঘকে পিণ্ডদান, পঞ্চশীল ও অষ্টশীল গ্রহণ এবং সন্ধ্যায় দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় হাজারো প্রদীপ প্রজ্বালন করে প্রার্থনা। এ উপলক্ষে প্রতিদিন ভিক্ষু সংঘের দেশনা শ্রবণের আয়োজনও থাকছে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় ফুলবিজু পালনের মাধ্যমে বৈসাবির আনুষ্ঠানিকতা শুরু করে। বিভিন্ন খাল ও ছড়ায় গঙ্গা দেবীর উদ্দেশে ফুল ভাসিয়ে পুরোনো বছরের দুঃখ-গ্লানি মোচনের পাশাপাশি নতুন বছরের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।
একইসঙ্গে, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক উৎসব ‘বৈসু’–ও রোববার থেকে শুরু হয়েছে। স্থানীয় ১১টি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মানুষ রঙিন পোশাকে, নাচ-গান ও অতিথি আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে উৎসবে অংশ নেন। প্রতিটি গ্রামে পরিবেশিত হয় ঐতিহ্যবাহী গরয়া নৃত্য।
বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী শোভাযাত্রায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম। র্যালিতে আরও অংশ নেন রোয়াংছড়ি থানার ওসি মো. মনজুর হোসেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান অংশৈমং মারমা, আলেক্ষ্যং ইউপি সদস্য বিশ্বনাথ তঞ্চঙ্গ্যা এবং রোয়াংছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ও উৎসব উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক মেহ্লাঅং মারমাসহ আরও অনেকে।
স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও পরিচ্ছদে সজ্জিত হয়ে সহস্রাধিক আদিবাসী নারী-পুরুষ শোভাযাত্রায় অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উসারা লাইব্রেরি প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
What's Your Reaction?






