সুদের টাকা পরিশোধে অটোরিকশাচালককে হত্যা

নোয়াখালীর সদর উপজেলায় অটোরিকশাচালক বাবর হোসেন (১৮) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে র্যাব-১১। এই ঘটনায় জড়িত মূল হোতা মনিরুল ইসলাম মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নিহত বাবর নোয়াখালী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম করিমপুর এলাকার মো. সেলিমের ছেলে।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালীর ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে, সোমবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে মাইজদীর একটি পেট্রল পাম্প এলাকা থেকে মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত মামুন (৩০) একই এলাকার তাজুল ইসলামের ছেলে। এ সময় তার কাছ থেকে নিহত বাবরের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি লিলেন গেঞ্জি উদ্ধার করা হয়। তবে এখনো বাবরের অটোরিকশাটির সন্ধান মেলেনি।
র্যাব জানায়, ৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে এক যাত্রীকে ভাড়া নিয়ে বের হওয়ার পর থেকে বাবরের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তার মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। পরে ১০ এপ্রিল দুপুরে সদর উপজেলার কোম্পানিঘাট সংলগ্ন একটি কবরস্থানের পাশে স্লুইসগেট এলাকায় বাবরের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
তদন্তে নামে র্যাবের একাধিক দল। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে মামুন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জানায়, তিনি কয়েকজন সুদখোরের কাছ থেকে ধার নেওয়া ৪৫ হাজার টাকার বিপরীতে দ্বিগুণ অর্থ পরিশোধে চাপের মুখে ছিলেন। সেই অর্থ জোগাড়ের জন্য পরিচিত বাবরের অটোরিকশা বিক্রির উদ্দেশ্যে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, দত্তেরহাট এলাকায় একটি ফ্রুটিকা জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে বাবরকে খাইয়ে অচেতন করে তুলে নিয়ে যান তিনি। এরপর সোনাপুর হয়ে পূর্ব চরউড়িয়া ইউনিয়নের একটি নির্জন সবজিক্ষেতে বাবরকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন মামুন।
র্যাব আরও জানায়, হত্যার পর মামুন ঘটনাস্থলের পাশে একটি বাঁশঝাড়ে বাবরের স্যান্ডেল এবং পাশের কলাবাগানে হত্যায় ব্যবহৃত গেঞ্জিটি ফেলে রেখে পালিয়ে যান।
র্যাব কর্মকর্তা মিঠুন কুমার কুণ্ডু বলেন, "শুধু টাকার জন্যই এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। আসামিকে সুধারাম মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির প্রক্রিয়া চলছে। এ ছাড়া, খোয়া যাওয়া অটোরিকশা উদ্ধার ও অন্যান্য সহযোগীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।"
What's Your Reaction?






