অনিয়মের গুঞ্জন ঘিরে সজাগ প্রশাসন, মিঠাপুকুরে কঠোর পদক্ষেপের আশ্বাস

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ছয়টি এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রকে ঘিরে ব্যাপক অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলেছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। এসব কেন্দ্রে গত বছর প্রশ্নপত্র ফাঁস, নকল সরবরাহ, স্বজনপ্রীতি ও প্রশাসনিক শিথিলতার অভিযোগ উঠেছিল। এবার বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ওই কেন্দ্রগুলোতে কঠোর নজরদারির দাবি জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
অভিযোগের কেন্দ্রে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হলো—বালারহাট দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, বৈরাতী উচ্চ বিদ্যালয়, পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া স্মৃতি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, শঠিবাড়ি ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা, মির্জাপুর কাদেরিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা এবং রানীপুকুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
গত বছর এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার সময় এসব কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র ফাঁসের পাশাপাশি কক্ষপরিদর্শক, কেন্দ্র সচিব ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। প্রশাসন তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিলেও অনেক ক্ষেত্রে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় অভিভাবকরা জানান, কেন্দ্রের নির্ধারিত সীমানার বাইরে অবস্থান করার নিয়ম থাকলেও তা মানা হয়নি। পরীক্ষা চলাকালে রাজনৈতিক প্রভাব, কোচিং সেন্টারের হস্তক্ষেপ ও আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে নকল সরবরাহের অভিযোগ ছিল ব্যাপক। এতে প্রকৃত মেধাবীরা ফলাফলে পিছিয়ে পড়ে, আর দুর্বল শিক্ষার্থীরা অস্বাভাবিকভাবে ভালো ফল করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, “কক্ষপরিদর্শকরাই বেশি অনিয়মে জড়িত। অনেকেই টাকা নিয়ে নকলের সুযোগ দেন। নিয়ম না মানায় পরীক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়।”
তবে এবার অনিয়ম রোধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে প্রশাসন। বালারহাট, বৈরাতী ও পায়রাবন্দ কেন্দ্রের সচিবরা জানান, “এবার সবকিছুতেই পরিবর্তন আনা হয়েছে। অনিয়মের কোনো সুযোগ থাকবে না। এমনকি সাংবাদিকরাও নির্ধারিত নিয়মের বাইরে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না।”
মিঠাপুকুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মমিন মণ্ডল বলেন, “যেসব কেন্দ্রে আগে অনিয়ম হয়েছিল, সেসব কেন্দ্রে এবার বিশেষ নজরদারি থাকবে। কোনো শিক্ষক বা শিক্ষার্থী অনিয়মে জড়ালে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র বর্মণ জানান, “অভিযুক্ত কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা থাকবে। স্বচ্ছ ও সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে আমরা প্রস্তুত।”
পরীক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে প্রশাসন থেকে নেওয়া উদ্যোগে আশাবাদী সচেতন অভিভাবকরা। তারা প্রত্যাশা করছেন, এবারের এসএসসি পরীক্ষায় কোনো বিতর্ক ছাড়া মেধার ভিত্তিতে ফলাফল নিশ্চিত হবে।
What's Your Reaction?






