আক্কেলপুরে এক ভোটে জয়ী প্রার্থী অবশেষে ৩ ভোটে ফেল
২০২১ সালের ১১ নভেম্বর জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে অনুষ্ঠিত তিলকপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এক প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীর ভোট পাওয়া ব্যালট পেপার পাঁচবার গণনা করে এক ভোটে জয়ী হয়েছিলেন মারুফ হাসান রনি। এবার আদালতে ভোট গণনা করে তিন ভোটে পরাজিত হয়েছেন তিনি।
চলতি বছর ১৫ অক্টোবর জেলা নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের (ইউনিয়ন পরিষদ) বিচারক ইফতেখার শাহরিয়ার ওই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে পরাজিত প্রার্থী ও বাদীপক্ষ আব্দুস সবুর পিন্টু (তালা প্রতীক) ১ হাজার ১১৪ ভোট পেয়ে জয়ী এবং বিবাদী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মারুফ হাসান রনিকে ১ হাজার ১১১ ভোটে পরাজিত ঘোষণা করা হয়। আব্দুস সবুরকে ৩ ভোটে জয়ী ঘোষণা করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২১ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে (ফুটবল প্রতীক) প্রার্থী মারুফ হাসান রনি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। নির্বাচনে ফলাফল ঘোষণার সময় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী (তালা প্রতীক) আব্দুস সবুর পিন্টুর ভোট পাওয়া ব্যালট পেপার পাঁচবার গণনা করেছিলেন মারুফ হাসান রনি। শেষে এক ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন রনি।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় ও আদালতের রায়ের কপি সূত্রে জানা গেছে, তিলকপুর উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে মোট ভোট পড়েছিল ২ হাজার ২৫৫টি। তখন গণনা করে দেখা যায় বাদীপক্ষ আব্দুস সবুর তালা প্রতীকে ভোট পেয়েছিলেন ১ হাজার ১২৭ ভোট। এখন পেয়েছেন ১ হাজার ১১৪ ভোট। প্রতিপক্ষ ফুটবল প্রতীকে আগে পেয়েছিলেন ১ হাজার ১২৮ ভোট। এখন পেয়েছেন ১ হাজার ১১১ টি।
বিজয়ী আব্দুস সবুর পিন্টু বলেন, ‘২০২১ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমি আমার ওয়ার্ডের জনগণের ভোটে নির্বাচিত ইউপি সদস্য সেটি আদালতের রায়ে তা প্রমাণিত। দীর্ঘ প্রায় তিন বছর পরে সেই রায়ে আমি সন্তুষ্ট। আমি আমার ভোটারের প্রতি কৃতজ্ঞ, তারা আমাকে ভোট দিয়ে জয়ী করলেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী মারুফ হাসান রনি সেই জনগণের অধিকার জোর করে কেরে নিয়েছিল ভোট গণনার সময়।’
তিনি বলেন, ‘সে তার ভোট না গুনে আমার ভোট পাঁচবার গুনে এক ভোটে আমাকে পরাজিত করে জয়ী হয়েছিল। আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করছি দ্রুত সময়ের মধ্য আদালতের রায়কে আমলে নিয়ে নতুন গেজেটে আমাকে ইউপি সদস্য হিসেবে ঘোষণা করা হোক। সেই সঙ্গে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
জানতে চাইলে মারুফ হাসান রনি বলেন,আমি আদালতের এই রায় মানি না। রায়ের বিরুদ্ধে আবার আপিল করব। ২০২১ সালের নির্বাচনে ভোট গণনার সময় ভোট সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে ভোট গণনা করে আমাকে এক ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করেছিলেন। আমি নির্বাচনে বা ভোট গণনার সময় কোনো প্রভাব দেখাইনি। বরং প্রতিপক্ষ আব্দুস সবুরের লোকজনই তখন প্রভাব খাটিয়েছিল। আমি জনগণের ভালোবাসায় পাওয়া ভোটে জয়ী হয়েছি।’
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফজলুল করিম বলেন, ‘২০২১ সালে তিলকপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পূর্ণ ভোট গণনা করে আব্দুস সবুর নামের এক ইউপি সদস্য প্রার্থী আদালতের রায়ে তিন ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। আমরা রায়ের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়েছি। সেখানে সিদ্ধান্ত নেবেন নির্বাচন কমিশন।
What's Your Reaction?