আক্কেলপুরে মুলা আর ফুলকপি নিয়ে বিপাকে কৃষকরা
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা একটি কৃষি প্রধান এলাকা। এ উপজেলার বিভিন্ন মৌসুমি সবজি গোটা দেশে সরবরাহ করা হয়। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে সবজির প্রচুর ফলন হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে সবকিগুলোর দাম চড়া থাকলেও এখন বাজারে অল্প দামে সবজিগুলো বিক্রি হচ্ছে। সবজির দাম কম হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকরা।
বৃহস্পতিবার আক্কেলপুর কলেজহাটের পাইকারি সবজি বাজারে এ মৌসুমের সবচেয়ে কম দামে সবজি বিক্রি হয়েছে। পাইকারি বাজারে ফুলকপি প্রতি কেজি ২ টাকা, মুলা ১ টাকা, শিম ৬ টাকা, বেগুন ১০ টাকা, ছোট কালো বেগুন ৭ টাকা, পালংশাক ৬ টাকা, শসা ১৫ টাকা, আলু ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, পেঁয়াজ ৪০, কাঁচামরিচ ৩০ টাকা, ধনেপাতা ১৫ টাকা, বাঁধাকপি প্রতিটি ১০ থেকে ১২ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষ অল্প দামে সবজি কিনতে পারলেও লোকসানের মুখে পড়েছেন কৃষকরা।
কৃষি অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, উপজেলায় শীতকালে ২৪ থেকে ২৫ ধরনের শাকসবজির চাষ হয়ে থাকে, গ্রীষ্মকালে চাষ হয় ১৫ থেকে ১৬ ধরনের শাকসবজি। শীত মৌসুমে আক্কেলপুর পৌরসভা ও ৫টি ইউনিয়নে নানা জাতের সবজি চাষ করেছেন কৃষকরা। বর্তমানে শীতকালীন বেগুন, শিম, পালং ও লালশাক, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ধনেপাতা, টমেটো, মরিচসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি বাজারে উঠেছে। কলেজ বাজার হাটে প্রায় সব ধরনের শীতকালীন সবজির সরবরাহ রয়েছে।
চাষিরা জানান, মৌসুমের শুরুতে মুলা ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করলেও ১৫ দিন ধরেই কমেছে সবজির দাম। ১৫ দিন আগে ফুলকপি প্রতি পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি করলেও এখন তা সর্বোচ্চ ২ থেকে ৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শুরুতে ভালো দাম পাওয়া গেলেও এখন দাম কমে আসায় লোকসানের মুখে কৃষকদের পড়তে হচ্ছে।
উপজেলার সোনামুখি ইউনিয়নের ভদ্রকালী গ্রামের মুলা চাষি মো: আব্দুস সালাম আক্ষেপ করে বলেন, ‘এক টাকায় চকলেট না মিললেও মিলছে এক কেজি মুলা। এতে করে ভ্যান ভাড়া ও লেবারেরও খরচা উঠছে না। আমি এবার এক বিঘা জমিতে মুলা চাষ করেছি। আজ হাটে ৬ মণ মুলা নিয়ে এসেছি। মৌসুমের প্রথমে মুলার ভালো দাম পেলেও আজ এক থেকে দেড় টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে করে উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দামও পাচ্ছি না।
আক্কেলপুর কলেজ বাজারের সবজি বিক্রেতা মো: রেজা কিবরয়িা বলেন, ‘বাজারে প্রচুর শীতের সবজি আমদানি হওয়ায় দাম কমেছে। এখন বাজারে সবজির দামে ধস নেমেছে। কৃষকের আয় কমেছে। তবে ক্রেতারা অল্প দামে সবজি পেয়ে বড্ড খুশি।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘উপজেলায় চলতি মৌসুমে শীতকালীন সবজির আবাদ হয়েছে ৫৩০ হেক্টর জমিতে। গত বছর সবজির উৎপাদন ভালো হয়েছিল। আশা করা হচ্ছে এ বছরও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। চলতি মৌসুমে সবজির ভালো ফলন হওয়ায় ও বাজারে সরবরাহ বেশি থাকায় দামও কমে এসেছে।
What's Your Reaction?