আত্রাইয়ে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বান্দাইখাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার মণ্ডলের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের উত্যক্ত ও যৌন হয়রানির অভিযোগে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় এলাকাবাসীর ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী অংশগ্রহণ করেন।
জানা গেছে, অভিযুক্ত দিলীপ কুমার মণ্ডল পূর্বে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। সম্প্রতি প্রধান শিক্ষক অবসরে গেলে তাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, সহকারী শিক্ষক থাকা অবস্থায়ও তিনি ছাত্রীদের বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করতেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, দিলীপ কুমার মণ্ডল আমাদের গায়ে হাত দেন, ওড়না ধরে টানেন, অশালীন প্রস্তাব দেন এবং যৌন হয়রানির চেষ্টা করেন। আমরা চাই না এমন একজন ব্যক্তি আমাদের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করুক।
দশম শ্রেণির ছাত্রী কামরুন্নাহার, তানজিমা, তাসফিয়া, নূরে জান্নাত ও ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, “আমরা বিদ্যালয়ে নিরাপদে পড়াশোনা করতে চাই। কিন্তু দিলীপ স্যারের আচরণ আমাদের আতঙ্কিত করে তুলেছে। তার অপসারণ চাই।”
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সমাজকর্মী মো. আকরাম হোসেন, মো. আনোয়ার হোসেন তরফদার এবং ছাত্রী অভিভাবক মো. ওহিদুর রহমান। তারা বলেন, “চরিত্রহীন একজন শিক্ষককে বিদ্যালয়ে রাখা আমাদের সন্তানের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। আমরা তার শাস্তি ও অপসারণ দাবি করছি।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দিলীপ কুমার মণ্ডল বলেন, “এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সাজানো। এটি আমার বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র।”
আত্রাই উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার প্রদীপ কুমার জানান, “এই বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। তিনি বর্তমানে ছুটিতে রয়েছেন। ফিরে আসার পর বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামাল হোসেন বলেন, “আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন মো. লুৎফর রহমান, মো. মহসিন আলী বাদল, মো. খোরশেদ আলম, মো. মামনুর (আনোয়ার), মো. ফিরোজ হোসেন, মো. মুকুল হোসেনসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
What's Your Reaction?






