আদালতের আদেশের তোয়াক্কা নেই, কোম্পানীগঞ্জে চলছে অবৈধ ইটভাটা

রিপন মজুমদার, জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালীঃ
Apr 14, 2025 - 02:14
 0  4
আদালতের আদেশের তোয়াক্কা নেই, কোম্পানীগঞ্জে চলছে অবৈধ ইটভাটা

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ইটভাটা চালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ছিদ্দিক উল্যাহ ভুট্রু। অভিযোগ উঠেছে, জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের যোগসাজশে চলছে মেসার্স বামনী ব্রিকস ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির এ কার্যক্রম।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের মধ্য রামপুর এলাকায় কৃষিজমি, বনাঞ্চল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘেরা প্রায় দুই একর জমিতে গড়ে ওঠা এ ইটভাটা থেকে নিয়মিতভাবে নির্গত হচ্ছে কালো ধোঁয়া। এতে আশপাশের ৩৫০টি পরিবার, বিশেষ করে নারী ও শিশুরা পড়ছেন মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। পাশাপাশি ধ্বংস হচ্ছে ফলজ গাছ ও ফসল।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কয়লার পরিবর্তে কাঠ পুড়িয়ে ইট উৎপাদন করা হয়। পরিবেশ ও স্বাস্থ্যবিধি তোয়াক্কা না করেই বসতঘরের পাশে গড়ে উঠেছে চিমনি। আইন অনুযায়ী এমন এলাকায় ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ হলেও স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যত নির্বিকার।

জানা গেছে, ২০১৭ সালে সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাই, বসুরহাট পৌরসভার তৎকালীন মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার প্রত্যক্ষ সহায়তায় ভুট্রু এ ইটভাটা স্থাপন করেন। স্থানীয় কয়েকজন ভুক্তভোগী হাইকোর্টে রিট করলেও রাজনৈতিক চাপে তা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হন। পরে স্থানীয় বাসিন্দা মো. সেলিম নতুন করে রিট করলে হাইকোর্ট ৩ মার্চ ২০২৫ তারিখে ইটভাটাটি বন্ধে নির্দেশ দেন। নির্দেশনা অনুযায়ী দুই মাসের মধ্যে কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ করার কথা থাকলেও তা মানা হয়নি।

ভাটার মালিক ছিদ্দিক উল্যাহ ভুট্রু স্বীকার করেছেন, তার ভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র নবায়ন হয়নি। তিনি বলেন, "পরিবেশ অধিদপ্তর বলেছে চালান, আমরা কিছু বলব না।"

এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিহির লাল সরদার জানান, “ভাটাটির ছাড়পত্র প্রক্রিয়াধীন। ইতোমধ্যে তাদের ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।”

জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, "অবৈধ ইটভাটা বন্ধে প্রশাসন তৎপর রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

প্রতিবেদন সংক্ষিপ্ত মূল্যায়ন:
এই ইটভাটা ঘিরে স্থানীয় বাসিন্দারা যে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন, তা যেমন মানবিক, তেমনি আইনি ও পরিবেশগত দৃষ্টিকোণ থেকেও উদ্বেগজনক। আদালতের আদেশ অমান্য করে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow