আলফাডাঙ্গায় স্বামীকে হত্যা: স্ত্রী ও পুত্রবধূ গ্রেপ্তার

কবির হোসেন, আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর ) প্রতিনিধিঃ
Apr 19, 2025 - 14:52
 0  18
আলফাডাঙ্গায় স্বামীকে হত্যা: স্ত্রী ও পুত্রবধূ গ্রেপ্তার

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় স্বামী হত্যার ঘটনায় স্ত্রী ও পুত্রবধূকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। নিহতের ছোট ভাই বাদী হয়ে তিনজনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও তিন-চারজনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেছেন।

নিহত ব্যক্তি ওবায়দুর রহমান মুন্সী (৫৫)। তিনি আলফাডাঙ্গা পৌরসভার ইছাপাশা গ্রামের বাসিন্দা এবং আব্দুল খালেক মুন্সী ওরফে 'ডগ সাহেব'-এর বড় ছেলে।

ঘটনার পরদিন শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত স্ত্রী সাবিনা বেগম (৪৫) ও পুত্রবধূ মাশকারা খাতুন (২২)-কে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ওবায়দুর রহমান মুন্সীর সঙ্গে তার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের পারিবারিক কলহ চলছিল। গত বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে ওবায়দুরের সঙ্গে স্ত্রী সাবিনা বেগম ও পুত্রবধূ মাশকারার বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সাবিনা বেগম ঘরে থাকা পাথরের পুতা দিয়ে স্বামীর মাথায় আঘাত করেন।

খবর পেয়ে নিহতের ছোট ভাই সিরাজুল হক জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওবায়দুরকে উদ্ধার করে আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের ভাই সিরাজুল হক অভিযোগ করে বলেন, “আমার ভাবি ও ভাতিজারা ভাইকে দীর্ঘদিন ধরে মানসিক নির্যাতন করতেন। মাঝেমধ্যে ভাইয়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন, এমনকি তার গায়েও হাত তুলতেন। ঘটনার রাতে ভাবি এসে বলেন, ‘তোমার ভাইকে কেউ মেরে রেখে গেছে।’ আমি ভয় পেয়ে তাদের বাড়িতে যাইনি। পরে পুলিশে খবর দিলে তারা গিয়ে ভাইকে উদ্ধার করে।”

এ ঘটনায় শুক্রবার রাত আটটার দিকে প্রায় সহস্রাধিক গ্রামবাসী থানা চত্বরে জড়ো হয়ে হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। তারা ঘটনার দ্রুত ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। গ্রামবাসীরা থানাপুলিশকে ধন্যবাদ জানান অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করায় এবং খুনের সঙ্গে জড়িত বাকি আসামিদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের আলটিমেটাম দেন। পাশাপাশি নিরীহ কাউকে যেন হয়রানি না করা হয়, সেই দাবিও তোলেন তারা।

আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ বলেন, “ঘটনার পরপরই নিহতের স্ত্রী ও পুত্রবধূকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তদন্তের স্বার্থে নিরীহ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়েও সতর্ক রয়েছে পুলিশ।”

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow