আ’লীগের হামলায় জীবনের সবকিছু হারিয়ে এখন মানসিক রোগী হানিফ শেখ

পিরোজপুরের নাজিরপুরে রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার হয়ে বিগত ১০ বছর ধরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন মো. হানিফ শেখ (৩৫) নামের স্বেচ্ছাসেবক দলের এক সাবেক নেতা। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সদর ইউনিয়নের কলাতলা গ্রামে। তিনি মৃত সিদ্দিক শেখের ছেলে ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ওয়ার্ড সভাপতি ছিলেন।
ভুক্তভোগীর ছোট ভাই ও উপজেলা কৃষক দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মো. আনিচ শেখ জানান, ২০১৪ সালের ৬ অক্টোবর সকালে ব্যবসায়িক কাজে খুলনা যাওয়ার পথে শেখমাটিয়া ইউনিয়নের বুইচাকাঠি বাজার এলাকায় হানিফ শেখকে পথরোধ করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত একদল সন্ত্রাসী। পরে তাকে উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক (বর্তমান সভাপতি) মো. মোশারেফ হোসেন খানের নেতৃত্বে দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে পুলিশ ও নেতাকর্মীদের সামনে বেঁধে মারধর করা হয়। এ সময় তিনি জ্ঞান হারালে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয় এবং মিথ্যা মামলায় আটক দেখানো হয়।
ছয় মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেলেও ওই ঘটনার পর থেকেই তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। প্রথমদিকে তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো, পরে চিকিৎসকের পরামর্শে তা খুলে দেওয়া হয়। তবে এখনও তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি।
ভাই আনিচ শেখ আরও বলেন, একই দিন রাতে হানিফ শেখের বাড়ি এবং পরদিন স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের ছয়টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ওই ঘটনায় হানিফ শেখের নামে পাঁচটি এবং তার নিজের নামে আটটি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। ঘর পুড়ে যাওয়ায় এবং মামলা-হামলার কারণে পুরো পরিবার আর্থিকভাবে নিঃস্ব হয়ে যায়।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মো. রিয়াজ ফরায়েজী বলেন, "শুধু বিএনপি করার অপরাধেই হানিফ শেখ আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন। এখন তিনি এক মানবেতর জীবনযাপন করছেন।"
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. মিজানুর রহমান দুলাল বলেন, “২০১৪ সালের ৭ অক্টোবর পূর্বপরিকল্পিতভাবে কলাতলা গ্রামে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঘরবাড়িতে হামলা চালায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। দোকানপাট ও ছয়টি ঘরে আগুন দেওয়া হয়। এর আগের দিন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা হানিফ শেখকে ধরে মারধর করে পুলিশে দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো মামলা গ্রহণ করা হয়নি। আমরা ঘটনার তদন্ত ও ন্যায়বিচার দাবি করছি।”
What's Your Reaction?






