আশুলিয়ায় মোমেনুল ইসলাম মোমিন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করে কিশোর গ্যাং সদস্যরা।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার দিকে আশুলিয়ার গাজীরচট বসুন্ধরা এলাকায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে।
নিহত মোমেনুল ইসলাম মোমিন (২৮) নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানার খাস দাউদপুর এলাকার আজাহারের ছেলে। সে পরিবারের সাথে আশুলিয়ার দক্ষিণ বাইপাইল চাড়ালপাড়া এলাকায় বসবাস করতো বলে জানা যায়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- আশুলিয়ার দক্ষিণ বাইপাইল এলাকার সুরুজের ছেলে মোহাম্মদ নাজমুল (১৮), একই এলাকার হারুন মিয়ার ছেলে আশিকুল ইসলাম আসিফ (২২), দক্ষিণ গাজীরচট এলাকার আনোয়ার হোসেন আনুর ছেলে মো: আলিফ (১৮) ও একই এলাকার মৃত সোহেল মিয়ার ছেলে রমজান (২৬), কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার ধামঘর পূর্ব পাড়া এলাকার মৃত দৌলত মিয়ার ছেলে মো: ইব্রাহিম (৪৮) এবং একজন কিশোর অপরাধী রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যবসা নিয়ে রুবেল ও মোমিনের মধ্যে ঝামেলা চলছে। রুবেল বিভিন্ন সময় মোমিনকে তার আন্ডারে মাদক ব্যবসা করার জন্য প্রস্তাব দেয়। মোমিন তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাদের মধ্যে বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের জেরে গতকাল রাতে রুবেলের নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ মোমিনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ইমরুল হাসান জানান, গতকাল রাতে একসাথে বাসায় আসার সময় ঘটনাস্থলের পাশের একটি চটপটির দোকানে সামনে তাদেরকে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখতে পাই। পরে আমি মোমিনকে দৌড়ে পালাতে বলি। এ সময় মোমিনকে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে পাশের একটি মুদি দোকানের সামনে গিয়ে পরে যায়। এ সময় রুবেল তার নিকট থেকে ২টি সুইচগিয়ার বের করে নাজমুল ও আসিফের হাতে তুলে দেয় তাকে মারার জন্য। পরে তারা তাকে প্রকাশ্যে রাস্তার ওপর কুপিয়ে আহত করে। পরে পাশেই থাকা রিপনের মোটরসাইকেলে করে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় সোহেল স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে নেয়ার কিছু সময় পর তার মৃত্যু হয়।
নিহতের বন্ধু শামীম হোসেন বলেন, কিশোর গ্যাং তৈরির কারিগর রুবেল হোসেন গতকাল রাতে একবার (মোমিন) এর বাসায় হামলা করে৷ পরে মোমিন কে না পেয়ে ওর পিছনে লোক লাগায়। পরে রাতে ওকে রাস্তায় পেয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। রুবেলের নিজস্ব মাদকের আখড়া রয়েছে। আমরা তার বিচার চাই।
নিহতের স্ত্রী বিউটি আক্তার বলেন, রুবেল মাদকের ব্যবসা করতো। ওইসব করার জন্য সে আমার স্বামীকে বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছে, সে রাজি হয় নাই৷ পরে আমাকেও প্রস্তাব দিয়েছে আমিও মানা করে দিয়েছি। পরে হুমকি দিয়েছে। তাও না শোনায় পরে বলেছে, একবারে মেরে দিমু। পরে একবারে মেরে ফেললো। আমি এই হত্যার বিচার চাই ওদের ফাঁসি চাই।
পুলিশ জানায়, হত্যাকান্ডের ১ ঘন্টার মধ্যে থানা পুলিশের একাধিক টিম অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এদের মধ্যে নজরুল ও আসিফ নিজে কুপিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছে।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, গতকাল রাত ১১টার দিকে বাইপাইল বসুন্ধরা এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে রুবেলের নেতৃত্বে মোমিন নামের একজনকে কুপিয়ে গুরুত্বর আহত করে। পরে তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে রাত আড়াইটার দিকে সে মারা যায়। পরে আমরা অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে আটক করি। আটক কৃতরা প্রাথমিকভাবে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে। এছাড়াও নিহতের মৃত্যুদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।