ইসরায়েলের হামলা ও হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বেরোবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের লাগাতার হামলা এবং ভারতের হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ফিলিস্তিনের পক্ষে সংহতি প্রকাশ করে তারা ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানান এবং মুসলিম বিশ্বকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
বুধবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় মুসলিম স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। বিক্ষোভটি লালবাগ হয়ে পুনরায় প্রধান ফটকে এসে শেষ হয়। শিক্ষার্থীরা প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার হাতে নিয়ে ‘ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়াও’, ‘ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করো’, ‘হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিবাদ নিপাত যাক’—এমন নানা স্লোগান দেন।
সমাবেশে শিক্ষার্থী আল-আমিন বিশ্বনেতাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, "হে মুসলিম বিশ্বের নেতারা, আপনারা কোথায়? ২০০ কোটি মুসলমানের শক্তি কোথায়? ইতিহাস বলে, ১৯৭৩ সালে আরব দেশগুলো তেল অবরোধ করেছিল, কিন্তু আজ তারা কি শুধু নীরব দর্শক হয়ে থাকবে?"
জাতিসংঘের ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন,
"আপনারা নাকি শান্তিরক্ষক! তাহলে ইসরায়েল বারবার আগ্রাসন চালাতে পারছে কীভাবে? যদি জাতিসংঘের ভূমিকা পক্ষপাতদুষ্ট হয়, তাহলে মুসলিম বিশ্বকে বিকল্প সংগঠন গঠন করতে হবে।"
বেরোবি সমন্বয়ক জাহিদ হাসান জয় বলেন, "ইসরায়েলি পণ্য বয়কটের মাধ্যমে আমরা তাদের অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করতে পারি। আজ থেকে আমরা ইসরায়েলি পণ্য বর্জন করলাম, সবাইকে একই আহ্বান জানাচ্ছি।"
ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষার্থী হেলাল বলেন, "দিন দিন ফিলিস্তিনের নিরীহ মানুষদের ওপর হামলা চলছে। অথচ পশ্চিমা বিশ্বসহ কিছু আরব দেশও নীরব বা সাহায্যকারী ভূমিকায় রয়েছে। যদি শুধু দোয়া করলেই সব সমাধান হতো, তাহলে উহুদ কিংবা বদরের যুদ্ধের প্রয়োজন হতো না। তাই আমাদের কার্যকর প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।"
বিক্ষোভ চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কেউ সরাসরি বক্তব্য দেননি। তবে শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করা এবং ফিলিস্তিনের পক্ষে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া।
ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় গাজায় শত শত নিরীহ মানুষের মৃত্যু ঘটছে, যাদের মধ্যে শিশু ও নারীর সংখ্যা বেশি। বিশ্বজুড়ে এ হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হলেও পশ্চিমা শক্তিগুলোর নিরবতা এবং কিছু আরব দেশের নিষ্ক্রিয়তা মুসলিম শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। এরই অংশ হিসেবে বেরোবির শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
What's Your Reaction?






