ঈদের ছুটিতে সৈয়দপুরে বিয়ের ধুম পড়েছে

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি
Apr 13, 2024 - 17:16
 0  10
ঈদের ছুটিতে সৈয়দপুরে বিয়ের ধুম পড়েছে

ঈদের ছুটিতে নীলফামারীর সৈয়দপুরে বিয়ের ধুম পড়েছে। ঈদে আত্মীয়স্বজনকে একসঙ্গে পাওয়ার সুযোগে গত দুই দিনে দেড় শতাধিক বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এক দিনে একাধিক বিয়ের আয়োজনের করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে সংশ্লিষ্টজন ও প্রতিষ্ঠানগুলো।

শহরের কমিউনিটি সেন্টার, বিয়ে নিবন্ধনকারী, ডেকোরেটর ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টজন বলছেন, রমজান মাসে মুসলিম পরিবারে বিয়ে তেমন একটা হয়নি। কিন্তু ঈদের পরদিন শুক্র ও শনিবার দুই দিনে সৈয়দপুর উপজেলায় প্রায় দেড় শতাধিক বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিবছরে এই ঈদে আত্মীয়স্বজন ও চাকরিজীবীরা এলাকায় অবস্থান করায় অনেকে বিয়ের জন্য এ সময়টিকে বেছে নেন। 

এদিকে একসঙ্গে অনেক বিয়ের অনুষ্ঠান থাকায় বেশি ঝামেলায় পড়েছেন ডেকোরেটর ব্যবসায়ীরা। সৈয়দপুর শহরের পুরোনো মুন্সিপাড়ার ফকিরা ডেকোরেটরের মালিক সনু আহমেদ বলেন, ‘আমাদের এক দিনে তিন-চারটির বেশি অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারি। কিন্তু ঈদের পরদিন শুক্র ও শনিবারের জন্য ১০টি বিয়ের আসর ও প্যান্ডেল সাজানোর অর্ডার এসেছে। এদের মধ্যে গ্রামের সংখ্যাই বেশি।’ 

শহরের পাশাপাশি গ্রামের অর্ডার বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘শহরে ১০টি কমিউনিটি সেন্টার রয়েছে। যা আগে থেকে সাজসজ্জা করে রাখা থাকে।’ 

সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের হামুরহাট গ্রামের শাহাজাদা হোসেন বলেন, ‘মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে তিন দিন ঘুরেও ডেকোরেটর সামগ্রী ভাড়া পাইনি। পরে বাধ্য হয়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় নিজেই কম দামে কাপড় কিনেছি। পরে সেটা দিয়ে কোনো রকমে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ করেছি।’ 

শহরের ইসলামবাগ এলাকার মাইক্রো বাসচালক কবির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিয়ের ভাড়া রিজার্ভ করা রয়েছে। যার বেশির ভাগ শহরের মধ্যে। একই দিনে তিন-চারটি বিয়ের আগাম ভাড়াও নেওয়া হয়েছে।’ 

কবির আরও বলেন, ‘টাউন ভাড়ার পাশাপাশি দিনাজপুর, রংপুরের ভাড়া রয়েছে। তবে ঈদের এ সময়ে বিনোদনকেন্দ্রের ভাড়ার চাহিদার জন্য বিয়ের অনুষ্ঠানের দ্বিগুণ মূল্যে ভাড়া নিতে হচ্ছে।’ 

সৈয়দপুরে এক প্রসিদ্ধ রেস্টুরেন্টের মালিক মমিনুল ইসলাম মিঠু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত দুই দিনে অন্তত ৫০ জোড়া হবু বর-কনে পরিবারের মধ্যে আলোচনা হয়েছে এখানে। অনেককেই পছন্দ হওয়ায় হাসিখুশি মনে চলে যেতে দেখেছি। এর ফাঁকে রেস্টুরেন্টে আমার বেচাকেনা বেড়ে গেছে অনেক গুণ।’ 

স্থানীয় একটি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী তৌহিদার রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, আগামী ১৫ দিন পর্যন্ত শুধু বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য বুকিং রয়েছে। এখানে দিনে ও রাতে আলাদাভাবে বুকিং দেওয়া হয়। অনেকে দিনে-রাতে মিলে বুকিং নিয়েছেন। 

সৈয়দপুর শহরের বিয়ে নিবন্ধনকারী (কাজি) সাইদুল ইসলাম আজকের পত্রিকা জানান, আগে ধান কাটা শেষে বিয়ের মৌসুম শুরু হলেও লোকজন এখন সরকারি ছুটিকে ছেলেমেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য বেছে নেয়। গত দুই দিনে তিনি আটটি বিয়ে নিবন্ধন করেছেন বলে জানান তিনি। 

নীলফামারী-৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ সিদ্দিকুল আলম বলেন, ‘ঈদের পর দিন থেকে আজ অবধি ৪০টির বেশি বিয়ের দাওয়াত পেয়েছি। একই দিনে একাধিক অনুষ্ঠান থাকায় দাওয়াত রক্ষা করাও কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবুও জনপ্রতিনিধি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করছি।’

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow