কাপাসিয়ায় ভুয়া সনদে শিক্ষকের এক যুগ চাকরি

আরিফা হক, গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি
Dec 9, 2024 - 18:50
 0  4
কাপাসিয়ায় ভুয়া সনদে শিক্ষকের এক যুগ চাকরি

গাজীপুর কাপাসিয়ায় এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে শিক্ষক নিবন্ধন জাল ও ভুয়া সনদে এক যুগ চাকরি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা সিংহশ্রী ইউনিয়নের কপালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ে জাল নিবন্ধন ও ভুয়া সনদ ব্যবহার করে চাকরি করছেন আছমা আক্তার নামে এক আইসিটি শিক্ষক। গত ফেব্রুয়ারিতে কাপাসিয়া কপালেশ্বর বিদ্যালয়ে জাল সনদে  চাকরি শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেছিল উপজেলা শিক্ষা বিভাগ। অবশেষে সেই শিক্ষক আছমা আক্তারের সনদ জাল প্রমাণিত হলো।

অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, নিজের যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও কম্পিউটার সনদ ও জাল নিবন্ধনে নিজের নাম বসিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে স্কুলে চাকরি নেয় ওই আইসিটি শিক্ষক আছমা আক্তার। জাল সনদ ও নিবন্ধন জালিয়াতির বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে এলেও রহস্য কারণে নেওয়া হয়নি কোনো ব্যবস্থা। ফলে গত এক যুগ ধরেই জাল সনদে চাকরি করে তুলে নিয়েছেন সরকারি বেতন ভাতা। সুধু তাই নয় তার বিরুদ্ধে ডিপ্লোমা কম্পিউটার সার্টিফিকেট কোর্স ভুয়া বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসাইন বিষয়টি অবগত থাকা সত্ত্বেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেননি। এ বিষয়ে কপালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য হাবিবুর রহমান গত ১ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। পরে নির্বাহী অফিসার ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসাইনকে নির্দেশ দেন আইসিসি শিক্ষক আছমা আক্তারের সনদ যাচাইয়ের পদক্ষেপ নিতে। তার পরিপ্রেক্ষিতে কুমিল্লা জেলার গৌরীপুর উপজেলার দাউদকান্দি আকবর আলী খান কারিগরি ও বাণিজ্য কলেজে সনদ যাচাইয়ের জন্য একটি লিখিত আবেদন দাখিল করেন প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসাইন। পরে জানা যায় আছমা আক্তার, পিতা- রিয়াজ উদ্দিন, মাতা- লিপি বেগম নামে কোন শিক্ষার্থী  ওই কলেজ থেকে ১ অক্টোবর ২০১০ থেকে ৩১ মার্চ ২০১১ শিক্ষাবর্ষে কম্পিউটার সার্টিফিকেট কোর্সে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেননি, যার রেজি: নং ২০৭৯/২০২০, রোল ১৩ উক্ত সনদের কোন প্রকার তথ্য পাওয়া যায়নি এবং কম্পিউটার সনদটি এ কলেজ থেকে প্রদান করা হয়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ এ মর্মে লিখিত ভাবে নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনা জানাজানি হলে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জাল নিবন্ধন সনদধারী শিক্ষিকা আছমা আক্তারের বিরুদ্ধে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 

এ বিষয়ে কথা হয়  আছমা আক্তারের সাথে তিনি  বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন, তবে কোন কলেজ থেকে ডিপ্লোমা কম্পিউটার সার্টিফিকেট কোর্স সম্পন্ন করেছেন তার সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসাইন বলেন, আইসিটি শিক্ষক আছমা আক্তারের সনদ যাচাইয়ের পদক্ষেপ নিতে কুমিল্লা জেলার গৌরীপুর উপজেলার দাউদকান্দি আকবর আলী খান কারিগরি ও বাণিজ্য কলেজে সনদ যাচাইয়ের জন্য একটি লিখিত আবেদন দাখিল করি। আছমা আক্তার উক্ত কলেজের কম্পিউটার সার্টিফিকেট কোর্সে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন এমন কোন প্রকার তথ্য পাওয়া যায়নি এবং কম্পিউটার সনদটি এ কলেজ থেকে প্রদান করা হয়নি বলে
কলেজ কর্তৃপক্ষ এ মর্মে লিখিত ভাবে নিশ্চিত করেছেন আমাকে। এতে বুঝা যায় সনদটি জাল ও ভুয়া।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এমএ আরিফ সরকার বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি তবে যাচাই-বাছাই করে সনদ জাল প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow