কুবি-তে নারী সহিংসতা ও ধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

সারাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ ও নিপীড়নের প্রতিবাদে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
রবিবার (৯ মার্চ) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দেওয়া হয়— "তুমি কে আমি কে, আছিয়া আছিয়া", "আসিফ নজরুল তুই আইন দে, নইলে গদি ছাইড়া দে", "সারাবাংলায় খবর দে, ধর্ষকদের কবর দে", "একটা একটা ধর্ষক ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর"।
সমাবেশে বক্তব্য দেন সহকারী প্রক্টর ও সহযোগী অধ্যাপক ড. নাহিদা বেগম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক শামীমা নাসরিন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান, সহযোগী অধ্যাপক ড. কামরুন নাহার শীলা, প্রভাষক গোলাম মাহমুদ পাভেল, প্রভাষক মতিউর রহমান, প্রভাষক মশিউর রহমান এবং প্রভাষক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, "জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা লাল স্বাধীনতা পেয়েছি, কিন্তু নারীরা আজও স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত। দেশে প্রতিনিয়ত নারীরা ধর্ষণ ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছে, অথচ প্রশাসনিকভাবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। আমরা ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাই।"
বিভাগটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান বলেন, "ধর্ষণ একমাত্র অপরাধ যেখানে ভুক্তভোগীকেই দোষারোপ করা হয়। একজন বাবা হিসেবে আমি আমার মেয়ের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। আমরা সরকারের কাছে দ্রুত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।"
বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কামরুন নাহার শীলা বলেন, "দেশজুড়ে ধর্ষণের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। এমনকি শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না। প্রশাসনের ভূমিকা রহস্যজনক মনে হচ্ছে। সকল হত্যাকাণ্ড, লুটপাট ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে একটি সুস্থ ও নিরাপদ সমাজ গড়ে ওঠে।"
সহকারী প্রক্টর ড. নাহিদা বেগম বলেন, "ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।"
ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুর রহিম বলেন, "ধর্ষকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। নিজের সম্ভ্রম রক্ষায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গিয়ে কেউ প্রাণ হারালেও তা সম্মানের। দেশের সব মা-বোনকে আত্মরক্ষার জন্য সচেতন হতে হবে এবং ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।"
রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী জুলফা বলেন, "একজন নারী জন্মের পর থেকেই বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হয়। আজ আমরা যদি আছিয়ার জন্য কথা না বলি, তাহলে কাল আমাদের সাথেও এমন কিছু ঘটতে পারে। ধর্ষকের দ্রুত ফাঁসি কার্যকর করতে হবে, যাতে কেউ এ ধরনের ঘৃণ্য কাজ করার সাহস না পায়।"
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) মাগুরা জেলায় আট বছরের শিশু আছিয়াকে তার বোনের শ্বশুর হিটু ধর্ষণ করে, যা দেশব্যাপী তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
What's Your Reaction?






