গণমাধ্যমের সহযোগিতায় সুবর্ণচরে বাল্যবিবাহ বন্ধ করলো প্রশাসন
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ১৩ বছরের মেয়েকে সম্পত্তির লোভ দেখিয়ে বিয়ে করতে প্রস্তুতি গ্রহণ করছিলো বর পক্ষ ও মেয়ের নানা ও মামিরা। বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীর প্রশাসনকে অবগত করলে প্রশাসন এসে বিয়ে বন্ধ করে দেন।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (১২জুলাই) সকালে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে। সকালে সাড়ে আটটায় বাল্যবিবাহের সংবাদটি সাংবাদিক রাশেদুল ইসলাম কে জানালে তিনি তৎক্ষনাৎ প্রশাসনকে অবগত করেন। পরে বিষয় টা আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিয়ে স্থগিত করেন প্রশাসন।
প্রশাসন এলে টাকা ওয়ালা বর ও মেয়ের চাচা পালিয়ে যায়। তবে ছেলের পরিচয়ের ব্যাপারে কেউ মুখ খুলেনি। তবে ছেলের একটি ছবি রয়েছে, যা গণমাধ্যমের হাতে এসে পৌছেছে। অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মাধ্যমে জানা যায় পাত্রের নাম নুর হোসের ওরে আবু জাহের, তার বাড়ি নোয়াখালীর মাইজদীতে।
জানা যায় মেয়েটি স্থানীয় কলেজিয়েট হাই স্কুলের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী, তার বাবা মারা যাওয়ার পরে তার নানা-নানী রা লালন পালন করছে। কিন্তু তার বিয়ের বিষয় টা তার মা জানলেও তিনি তেমন রাজি নন। তার সৎ বাবা কে অবগত না করে তারা মেয়ে কে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে, এতে সম্পূর্ণ নারাজ মেয়ের বাবা।
এর আগে মেয়ের নানার সাথে এই বিয়ের বিষয়ে কথা বললে তিনি অত্র প্রতিবেদককে অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলেন। এবং কে বিয়ে ঠেকাবে বলে হুমকী প্রদান করেন।
পরে বিষয় টি সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল আমিন সরকার কে জানালে তিনি তৎক্ষনাৎ প্রশাসন কে বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন।
মেয়ের বাবা মুঠোফোনে বলেন- আমার মেয়ের বিয়ে কিন্তু আমি জানিনা। মেয়েটা এখনো ছোট তার বয়স ১২-১৩ বছর হবে, সে ৭ম শ্রেণিতে পড়ে কিন্তু এতো ছোট মেয়েকে তার নানা নানী সহ মামিরা বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে। এতে আমার মেয়ের পড়াশোনার ব্যাপক ক্ষতি হবে।
এই বিষয়ে একাধিক কল করলে ও সাড়া মেলেনি কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষক শহিদুল উল্যাহর। পরে বেলা ২টায় আবারও কল করলে মুঠোফোনে তিনি বলেন- আমার পরীক্ষা থাকায় আমি কল ধরতে পারিনি। আসলে বিষয় টা শুনেছি। আমি তো চট্টগ্রামে তাই তেমন কিছু জানি না। আপনাকে ধন্যবাদ জানাই এইরকম একটি ভালো কাজ করার জন্য। মেয়েটি পড়াশোনায় মধ্যম,নিয়মিত স্কুলে আসে। কিন্তু তারা কেন মেয়েটাকে নিয়ে এরকম করছে জানি না।
বাল্যবিবাহের ব্যাপারে স্থানীয় নিজেরা করি এনজিও সংস্থার প্রতিনিধি সুরেশ কর্মকার বলেন- মেয়েটি অপ্রাপ্ত বয়স্ক এর বিয়েন এখনো ৫-৬ বছর বাকী। এই মেয়েটাকে তারা টাকার লোভে পড়ে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে। এটা খুবই নির্মম একটা কাজ।এতে করে মেয়েটার ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে। তাই আমি গণমাধ্যম সহ প্রশাসন কে ধন্যবাদ জানাই।
মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মহি উদ্দিন চৌধুরী বলেন- বিষয় টা শুনছি,কিন্তু এটা ক্যামনে হয় ১২ বছরের মেয়েকে ৩৫ বছরের যুবকের সাথে বিয়ে? এটা খুবই খারাপ কাজ। এতে মিডিয়া সহ প্রশাসন কে ধন্যবাদ জানাই।
চর জব্বার থানার ওসি কাউসার আলম ভুঁইয়া বলেন খবর পেয়ে আমাদের পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়,এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
What's Your Reaction?