গাজীপুরে হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, একজন গ্রেফতার
গাজীপুরের সদর থানাধীন সামান্তপুর এলাকায় চাঞ্চল্যকর এক ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে একজন আসামীকে গ্রেফতার এবং হত্যার সাথে সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।
গত ১৫ অক্টোবর দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে সদর থানাধীন সামান্তপুর এলাকার একটি ধানক্ষেতে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশটির ডান চোখে আঘাতের চিহ্ন, দুই হাতের কব্জি বাঁধা, আঙ্গুলগুলো কাটা এবং দুই গোড়ালি রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক অবস্থায় লাশের পরিচয় কেউ সনাক্ত করতে পারেনি, এমনকি ফিঙ্গারপ্রিন্ট পরীক্ষা করেও কোনো পরিচয় মেলেনি। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট দ্রুত লাশ সনাক্তকরণ ও হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে। গণমাধ্যমের সহযোগিতায় প্রচারিত লাশের ছবির মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করা হয় যে, নিহত ব্যক্তি শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাটের নাঈম মাঝি (৩০), পিতা আনোয়ার হোসেন। তার ভাই সায়েম মাঝি লাশের পরিচয় সনাক্ত করে এবং অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে, সদর থানা পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামী সুমন মিয়াকে ২০ অক্টোবর ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে সামান্তপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে সুমন মিয়া জানান- নিহত নাঈম মাঝি চট্টগ্রাম থেকে তাদের কাছে ইয়াবা পরিবহন করতো। ইয়াবা ব্যবসা নিয়ে বিরোধের জেরে সুমন এবং তার ৩ সহযোগী মিলে নাঈমকে আটক করে এবং তার পরিবারের কাছে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরিবার মুক্তিপণের অর্থ দিতে বিলম্ব করায়, সুমন এবং তার সহযোগীরা নাঈম মাঝিকে বীভৎসভাবে হত্যা করে। সুমন মিয়া আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। বাকী আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। আসামী ও আলামতের বিবরণ: গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম মোঃ সুমন মিয়া (৩১), পিতা- মোঃ মনির হোসেন, মাতা-মোছাঃ পারভিন আত্তার, সাং-সামান্তপুর, গাজীপুর মহানগর, গাজীপুর। উদ্ধারকৃত আলামতের মধ্যে রয়েছে হত্যাকার্যে ব্যবহৃত একটি চাপাতি, একটি স্ক্রু ড্রাইভার এবং একটি ইট। এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সক্রিয় ভূমিকা ও সফলতা প্রশংসিত হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ উত্তর) গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে এই মামলার সর্বশেষ তথ্য জানানো হয়েছে এবং তারা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছেন।
What's Your Reaction?