চট্টগ্রাম কক্সবাজার রুটে স্পেশাল ট্রেন চলাচলের সময় ২০ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি
ঈদযাত্রা স্বস্তি ও আরামদায়ক করতে চট্টগ্রাম-পটিয়া-কক্সবাজার রুটে প্রথমবারের মতো ঈদ স্পেশাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। গত ৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে এক জোড়া ঈদ স্পেশাল ট্রেন চালু করা হয়। ঈদের দিন বাদ দিয়ে সেটি চলে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। এরপর ১৭ এপ্রিল থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত এই ট্রেন ফের চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। এখন এই মেয়াদ ২০ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ঈদ স্পেশাল ট্রেনটি এতদিন ‘কক্সবাজার স্পেশাল’ নাম দিয়ে চলাচল করছে।
ট্রেন দুটি আসা-যাওয়ার পথে দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া ও কক্সবাজারের ৭টি স্টেশনে থামে। এই প্রথম পটিয়াসহ এ অঞ্চলের মানুষ ট্রেনে চড়ে ঈদে বাড়ি যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। সড়ক পথের উপর বাড়িফেরা মানুষের চাপ কিছুটা কম থাকায় স্বস্তিতে বাড়ি ফিরেছে এ অঞ্চলের লাখো মানুষ।
ভ্রমণকারীদের অনেকে জানিয়েছেন, সড়কপথে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মানুষজনের পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদে বাড়ি যেতে কি পরিমাণ দুর্ভোগ পোহাতে হয়, সেটা বুঝানো মুশকিল। এবার সে ঝামেলা ও দুর্ভোগ ছাড়াই ট্রেনে করে স্বাচ্ছন্দ্যে তারা বাড়ি যেতে পেরেছেন।
প্রতিদিন চট্টগ্রাম-পটিয়া-কক্সবাজার রুটের কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেনটি চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে সকাল ৭টায় কক্সবাজারের উদ্দোশ্যে রওনা হন। আবার কক্সবাজার থেকে সন্ধ্যা ৭টায় ছেড়ে চট্টগ্রাম পৌঁছাবে রাতে। পথে ট্রেনটি ষোলশহর, জানালীহাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা ও রামু স্টেশনে নিয়মিত থামছে।
এদিকে কক্সবাজার রুটে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হয় গত বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে। বিপুল যাত্রী চাহিদা থাকলেও গত চার মাস ধরে এই রুটে চলাচল করছে মাত্র দুটি ট্রেন। তাও চলছে কেবল ঢাকা থেকে। ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচল করা কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও পর্যটক এক্সপ্রেস বিরতিহীন হওয়ায় দক্ষিণ চট্টগ্রামের যাত্রীরা পটিয়া-দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের সুফল পেতেন না। এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয়দেরও। কিন্তু রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম-পটিয়া-কক্সবাজার রুটে নতুন ট্রেন চালু করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সেই কাঙ্ক্ষিত দাবি গত ৮ এপ্রিল থেকে পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে রেলওয়ে।
স্থানীয়রা বলেন, ট্রেনে চড়ে কক্সবাজার যাওয়ার অধরা স্বপ্ন এবার ধরা দিয়েছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতটি স্টেশন থেকে টিকিট কেটে ট্রেনে চড়ে সমুদ্রনগরী কক্সবাজার যাওয়ার সুযোগ হয়েছে।
এদিকে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বিদ্যমান ব্যবস্থায় কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও পর্যটক এক্সপ্রেসে চড়ে প্রতিদিন চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কক্সবাজার যাওয়ার সুযোগ পান মাত্র ১১৫ জন করে যাত্রী। ফলে এই রুটে স্বাভাবিক সময়েই ট্রেনের টিকিট পাওয়া যেন অনেকটা দুষ্কর।
বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদ স্পেশাল ট্রেনটি ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত পরিচালনা করার অনুমতি ছিল। এখন সেটা আগামী ২০ মে পর্যন্ত পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এরপর রেলভবন থেকে যে নির্দেশনা আসবে সেভাবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে নিয়মিত এই রুটে ট্রেন পরিচালনা করা গেলে রেলওয়ে রাজস্ব বাড়বে বলেও তিনি জানান।
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের ঈদ স্পেশাল ট্রেনটি ১০/২০ লোড নিয়ে চলাচল করছে। ট্রেনটিতে সিট রয়েছে ৪৩৮টি। এরমধ্যে ১ম শ্রেণির সিট ৫৪টি, ১ম শ্রেণির চেয়ার ৫৪টি ও শোভন ৩৩০টি। এটি চট্টগ্রামের ষোলশহর, জানালিহাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা ও রামুতে যাত্রা বিরতি দেয়।
রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা তারেক মোহাম্মদ ইমরান বলেন, ‘গত ৮ থেকে ২৯ এপ্রিলের মধ্যে ১১, ১৫ ও ১৬ এপ্রিল তিনদিন ঈদ স্পেশাল ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। এ সময় মোট ১৯ দিন চলাচল করে ঈদ স্পেশাল। এই ১৯ দিনে এই ট্রেন দিয়ে ৪৪ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করেছে রেলওয়ে।
What's Your Reaction?