চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সংরক্ষিত জায়গা গুলোতে পন্য পড়ে থাকায় রয়েছে অগ্নিঝুঁকি
চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন শেডে দীর্ঘ সময়ে পড়ে থাকা ১ হাজার ৫৫৬ লট পণ্য নিলাম অথবা ধ্বংসের অনুরোধ জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখা বরাবর লিখা সেই চিঠিতে অখালাসকৃত এসব পণ্যের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা হুমকি এবং অগ্নিঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানানো হয়। তবে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে, নিলাম একটি রুটিন কার্যক্রম। প্রতি মাসে দুটি করে নিলাম সম্পন্ন হচ্ছে। বন্দরের হিসাবটি কাগজ নির্ভর। এর মধ্যে অনেক পণ্য নিলাম হয়ে গেছে বলে দাবি করেন কাস্টমস কর্তারা। জানা গেছে, গত ১৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল ম্যানেজারের দপ্তর থেকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্র্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা বিভিন্ন শেডে পণ্য থাকার কারণে সরকারের রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি অপারেশনাল কার্যক্রম চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এভাবে পণ্য পড়ে থাকার কারণে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সংরক্ষিত এলাকা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রতিনিয়ত অগ্নিঝুঁকি, নিরাপত্তা ঝুঁকি এবং পরিবেশ দূষণের হুমকিসহ বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্ন হচ্ছে। ইতোপূর্বে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি নিয়ে বারবার তাগাদা দেয়া হয়েছে। এছাড়া গত ২১ মার্চ এ সংক্রান্ত কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল ম্যানেজারের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সিসিটি–সিএফএস শেডে কাস্টমসকে হস্তান্তর করা পণ্য পড়ে আছে ৩২৭ লট, এনসিটি–সিএফএস শেডে ১২৪ লট, ১৩ নম্বর শেডে ২০৫ লট, ১২ নম্বর শেডে ১২৫ লট, ৯ নম্বর শেডে ২৩১ লট, ৮ নম্বর শেডে ১১৪ লট, ৭ নম্বর শেডে ৭২ লট, ৬ নম্বর শেডে ১০৭ লট, ৫ নম্বর শেডে ৩৩ লট, এন–শেডে ২৯ লট, পি ক্যামিকেল ও এক্সওয়াই শেড ৭২ লট এবং ডি শেডে ১২৯ লট পণ্য রয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. ফাইজুর রহমান দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রতি সপ্তাহে এ ধরনের পণ্যের তালিকা আমাদের কাছে পাঠানো হয়। আসলে বন্দর যে হিসেব দিয়েছে, সেখান থেকে অনেক পণ্য আমরা ইতোমধ্যে নিলাম সম্পন্ন করেছি। আমরা প্রতি মাসে অন্তত দুটি নিলাম করছি।
উল্লেখ্য, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়। সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। আমদানি পণ্য যথাসময়ে খালাস না নেয়ায় বন্দররে প্রায়ই কন্টেনার জট লাগে। দিনের পর দিন কন্টেনার পড়ে থাকলেও বন্দর কর্তৃপক্ষও চার্জ পায় না।
চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তারা জানান কাস্টমস কর্তৃপক্ষ যথাযথ সহযোগিতা না করাই বন্দরে অধিকাংশ মালামাল থেকে যায় । নিলাম কার্যক্রমে গতি আনলে বন্দরের অভ্যন্তরে মালামাল থেকে যাওয়ার কথা না।
What's Your Reaction?