চট্টগ্রামের শিকল বাহা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল ও স্থাপনা নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত
চট্টগ্রামের শিকলবাহা ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি গত ৭ বছর ধরে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে আছে। লাগাতার বন্ধ থাকতে থাকতে এই কেন্দ্রটির অনেক যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে পড়েছে। প্রায় ৪০ বছরের পুরনো এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়ার পর এবার এর যন্ত্রপাতি ও স্থাপনা নিলামে বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিডিবি। পিডিবির সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের সাথে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নিয়ে কথা হলে তারা জানান, কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরে পটিয়ার কোলাগাঁও ইউনিয়নে ১৯৮৪ সালে গ্যাসনির্ভর ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছিল। গ্যাসনির্ভর হওয়ায় শিকলবাহা ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রতি ইউনিট উৎপাদন খরচ একেবারেই কম বলে জানান পিডিবির সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা।
২০১৫ সালে কেন্দ্রটির সঞ্চালন লাইনের একটি ট্রান্সফরমারে আগুন লেগে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়। প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন একটি ট্রান্সফরমার বসানো হলেও কেন্দ্রটি উৎপাদনে যেতে পারেনি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির পরিচালন খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হওয়ায় ব্যয় হ্রাসে কেন্দ্রটির জনশক্তি ইতিমধ্যে পার্শ্ববর্তী ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে এটি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চললেও কোটি টাকা ব্যয়ের ধাক্কা সামলাতে কেন্দ্রটি ২০১৮ সালে স্থায়ীভাবে বন্ধই করে দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিডিবির চট্টগ্রাম দক্ষিণাঞ্চলের এক প্রকৌশলী জানান, শিকলবাহা ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন ব্যয় বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন খরচ থেকে ৪ গুণ কম ছিল। কেন্দ্রটির পুরনো যন্ত্রপাতি সরিয়ে সেখানে নতুন যন্ত্রপাতি দিয়ে উৎপাদন শুরু করলে গ্রাহককে কম পয়সায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যেতো।
শিকলবাহা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশে বেসরকারি মালিকানায় আরও পাঁচটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। সেখান থেকে পিডিবি ১৬ টাকায় প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ক্রয় করে থাকে। অথচ ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উৎপাদনখরচ প্রতি ইউনিট দুই টাকার কম।
এই ব্যাপারে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অশোক কুমার বলেন দৈনিক খোলাছোখ কে শিকলবাহা ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ৪০ বছরের পুরনো হয়েছে। ২০১৫ সালে কেন্দ্রটির সঞ্চালন লাইনে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এসময় নতুন ট্রান্সফরমার স্থাপন করেও উৎপাদনে যেতে পারেনি কেন্দ্রটি। এই কেন্দ্রটির উৎপাদন খরচ একেবারেই কম ছিল। ২০১৮ সালের পর এটি স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়। কেন্দ্রটি এখন অকশনে দেয়া হবে। আর চালুর সম্ভাবনা নেই।
What's Your Reaction?