নগরকান্দায় বসতবাড়িতে ঘর নির্মাণে বাধা, হয়রানির অভিযোগ

ফরিদপুরের নগরকান্দায় পৈত্রিক সম্পত্তিতে বসতঘর নির্মাণ করতে গিয়ে আইনি জটিলতা ও হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন নুরজাহান বেগম নামে এক নারী। উপজেলার লস্করদিয়া ইউনিয়নের গোড়াইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্র ও সংশ্লিষ্ট নথি অনুযায়ী, গোড়াইল মৌজার বিএস ১৪২৯ নং দাগের ৩৩ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন চার ব্যক্তি—কালু সরদার, মালেক সরদার, মধু সরদার ও মৃত গনি সরদার। তাদের মধ্যে গনি সরদারের মেয়ে নুরজাহান বেগম পৈত্রিক সূত্রে ১২ শতাংশ জমির ওয়ারিশ।
নুরজাহান বেগম জানান, দীর্ঘদিন ধরে তিনি বাবার ভিটায় বসবাস করছেন। সম্প্রতি পুরোনো ঘর ভেঙে নতুন ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নিলে প্রতিবেশী সোনা সরদারের ছেলে জামাল সরদার বাঁধা দেন। তিনি দাবি করেন, উক্ত জমিতে তারও মালিকানা রয়েছে।
জামাল সরদার প্রথমে ২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বর ১৪৪ ধারা জারি করতে আদালতে মামলা করেন (মামলা নং ৫৩১)। কিন্তু উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তদন্ত শেষে নুরজাহান বেগমের পক্ষে প্রতিবেদন দিলে আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন।
এরপর জামাল সরদার তার পিতা সোনা সরদারকে বাদী করে ফরিদপুরের ভাঙ্গা দেওয়ানি আদালতে নতুন একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং ৪১৪/২৪, তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০২৪)। পরবর্তীতে একই সম্পত্তি নিয়ে আরও একটি ১৪৪ ধারা মামলা করেন (মামলা নং ৫৮৫, স্মারক নং ১৫৮২), যা বর্তমানে তদন্তাধীন।
নুরজাহান বেগম বলেন, "আমার বাবার জমিতে আমার বৈধ ওয়ারিশান অধিকার রয়েছে এবং বিএস রেকর্ডেও আমার নাম আছে। তবুও জামাল সরদার মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। ঘর নির্মাণ করতে না পারায় খোলা জায়গায় অমানবিক পরিবেশে থাকতে হচ্ছে।"
অন্যদিকে জামাল সরদার বলেন, "নুরজাহান বেগমের নামে উক্ত জমিতে ভুল রেকর্ড হয়েছে। এটি আমাদের দাদার সম্পত্তি, তাই আমরা আদালতে মামলা করেছি। চূড়ান্ত রায় না পাওয়া পর্যন্ত ঘর নির্মাণে বাধা থাকবে।"
স্থানীয়রা জানান, নুরজাহান বেগম তার পৈত্রিক ভিটায় দীর্ঘ প্রায় একশ বছর ধরে বসবাস করছেন। এ বিষয়ে আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ না নিলে নুরজাহান বেগমের ভোগান্তি আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে। একই সঙ্গে আদালতের চূড়ান্ত রায়ের মাধ্যমে প্রকৃত মালিকানা নির্ধারণ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
What's Your Reaction?






