নগরকান্দায় বিএনপির শামা ওবায়েদ রিংকু সহ ৩৬ জনের নামে হত্যা মামলা
ফরিদপুরের নগরকান্দায় গত ২১ আগষ্ট বুধবার বেলা ১১টায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল সমর্থক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ রিংকুর সমর্থকদের সাথে সংঘর্ষ হয় এবং সংঘর্ষে কবির ভূঁইয়া(৫৫) নামে একজন নিহত হয়।
নিহত কবির ভূঁইয়ার স্ত্রী মোনজিলা বেগম (৪৪) বাদী হয়ে ২৪ আগস্ট শনিবার নগরকান্দা থানায় একটি হত্যা মানলা দায়ের করে। মামলায় বিএনপি নেত্রী শামা ওবায়েদ রিংকু কে প্রধান আসামী করে ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করা সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৫০/৬০ জনের নামে মামলা করেন। মামলার আসামীরা হলেন বিএনপি নেত্রী ১। শামা ওবায়েদ (৫২), পিতা- মৃত কে, এম, ওবায়দুর রহমান, সাং- লস্করদিয়া, থানা- নগরকান্দা, জেলা- ফরিদপুর,২। মাসুদুর রহমান তৈয়ব (৪৫), ৩। সাইফুর রহমান মুকুল (৫০), উভয় পিং- মৃত তোফাজ্জেল হক, সর্বসাং- নগরকান্দা, ৪। বাবুল তালুকদার (৫৫), পিতা- মৃত ফটিক তালুকদার, সাং- লস্করদিয়া, ৫। মিজানুর রহমান মিজান (৪৬), ৬। আজিজুল মাতুব্বর (৫৮), সর্ব পিং- ফজলু মাতুব্বর, ৭। আলমগীর হোসেন বকুল (৫৮), পিং- মৃত রশীদ মিয়া, ৮। বলা (৪২), ৯। হাবিব (৩৯), সর্বপিং- বাদশা, ১০। রুবেল (২৮), পিং- আবুল, ১১। হাফিজ (৫০), পিং- মৃত কালাম, ১২। জামাল (৪০), পিং- ছত্তার মাতুব্বর, ১৩। সূর্য মাতৃব্বর (৫২), পিং- মৃত মাজেদ মাতুব্বর, ১৪। জাহিদুল (৪০), ১৫। ছাইদুল (৪৫), উভয় পিং- মৃত হালিম মোল্যা, সর্ব সাং- ছাগলদী, ১৬। হেলাল (৪৬), পিং- মৃত আলেম মুন্সি, ১৭। মিরান মোল্যা (৪২), পিং- আওলাদ মোল্যা, উভয় সাং- জঙ্গুরদি, ১৮। জাহাঙ্গীর (৪২), পিং- আনোয়ার, ১৯। হান্নান (৩৮), পিং- মৃত মোহাম্মাদ, সাং- মিনার গ্রাম ২০। তারা মিয়া (৫৫), পিং- মৃত লাল মিয়া, ২১। মুরাদ (৫২), পিং- মৃত তজির শেখ, সর্বসাং- শ্রীরামদিয়া,২২।রব মাতুব্বর (৬০), পিং- মৃত করিম মাতুব্বর, সাং- খৈয়া, ২৩। শাহাদাত মোল্লা (৫০), পিং- মালেক মোল্লা, সাং- ব্রাহ্মণডাঙ্গা, ২৪। মশিউর খাঁ (৪৫), পিং- হাশেম খাঁ, সাং- গোয়ালদি, ২৫। নুর ইসলাম (৪২), পিং- মাবু মাতুব্বর, সাং- নগরকান্দা, ২৬। রবি খাঁ (৩৫), পিং- বাবু খাঁ, সাং- বনগ্রাম, ২৭। সিদ্দিকুর রহমান তালুকদার (৫০), পিং- আয়নাল তালুকদার, সাং- রামকান্তপুর, ২৮। আসাদ মাতুব্বর (৪৫), পিং- নালু মাতুব্বর, সাং- সালথা, ২৯। জয়নাল আবেদীন (৫৫), পিং- নান্নু শেখ, সাং- সোনাপুর, ৩০। আজাদ খোন্দকার (৪৫), পিং- মৃত আয়নাল খোন্দকার, সাং- গট্টি, থানা- সালথা, ৩১। আসাদুজ্জামান (৪৫), পিং- আয়নাল মাতুব্বর, সাং- বাগাট, ৩২। নুর আলম (৩১), পিং- আলী, সাং- ছাগলদী, ৩৩। ফরিদ মোল্যা (৪৮), পিং- মোহন মোল্যা, সাং- ছাগলদী, ৩৪। সুমন মাতুব্বর (৪০), পিং- মৃত হিরু মাতুব্বর, সাং- নগরকান্দা, ৩৫। শহীদুল (৩৫), পিং- মৃত বাজারি তালুকদার, সাং- ছাগলদি, ৩৬। হাফিজ শরীফ (৫২), পিং- মালেক শরীফ, সাং- ঝাটুরদিয়া, থানা- নগরকান্দা, জেলা- ফরিদপুরগন সহ আরও ৫০/৬০ জন।
থানায় বাদীর করা এজাহারে উল্লেখ্য যে ঘটনার দিন বিএনপির নেত্রী শামা ওবায়েদ রিংকুর নেতৃত্বে তার দলবল
রামদ্যা, ছ্যানদ্যা, ভেলা, সড়কী, লোহার রডসহ জীবন নাশক মারাত্মক অস্ত্র-সন্ত্রসহ অবস্থান নেয়। ওই সময় আমার স্বামী বাড়ি থেকে নগরকান্দা বাজারে সদাই করার উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় একই দিন বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নগরকান্দা বেইলি ব্রিজের পশ্চিম পার্শ্বে মিনারগ্রাম ভ্যান ষ্ট্যান্ড সংলগ্ন রাস্তার উপর পৌঁছানো মাত্রই ৪ নং আসামী বাবুল তালুকদার বলে ওকে ধরে খুন কর, শামা আপা হুমুক দিয়েছে। শহীদুল ইসলাম বাবুলের লোকদের যাকে যেখানে পাবি তাকে খুন করবি। তাতে মামলা মোকদ্দমা যা হয় আমি দেখব। শামা ওবায়েদের নির্দেশে এবং বাবুল তালুকদারের হুকুমে ২ নং আসামী মাসুদুর রহমান তৈয়ব হাতে থাকা ১৮ ইঞ্চি ভ্যালা দিয়া খুন করার উদেশ্যে আমার স্বামীর বুক পেচাইয়া কোপ দিলে সে একটু সরিয়া গেলে তাহার কোমরের ডান পাশের দিকে লাগিয়া এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে যায়। তখন সে মাটিতে পড়িয়া গেলে খুন নিশ্চিত করার জন্য ৫নং আসামী তার হাতে থাকা লোহার রড দিয়া আমার স্বামীর মাথায় বাড়ি মারিয়া মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে। ইতিমধ্যে মৃত নিশ্চিত করায় ৭নং আসামী বকুল মাতুব্বর, ১৮ নং আসামী জাহাঙ্গীর এবং ৯,১০,১১ নং আসামীগন এ্যালোপাথাড়িভাবে বাইরেইয়া মৃত্যু নিশ্চিত করার চেষ্ঠা করে। তখন স্বাক্ষী। ১। মোঃ নান্নু শেখ, পিং- মৃত ফটিক, ২। আব্দুল আলী, পিং- মৃত সফিজদ্দিন, ৩। আব্দুল মান্নান, পিং- মৃত আদেল, ৪। ছিয়াম, পিং- সৈয়দ আলী, সর্বসাং- ছাগলদী, ৫। বিল্লাল হোসেন মোল্যা, পিং- মৃত মতিয়ার হোসেন মোল্লা, সাং- মিনার গ্রামগন আগাইয়া আসিলে স্বাক্ষী নান্নু শেখকে রড দিয়া বাড়ী মারে আসামী জাহিদুল। স্বাক্ষী ছিয়ামকে খুন করার উদ্দেশ্যে হাতে থাকা রাম দ্যা দিয়া মাথার ডান পাশে কোপ মারিয়া মারাত্বক রক্তাক্ত জখম করে, আসামী আজিজুল মাতুব্বর এবং ছিয়ামকে খুন করার উদ্দেশ্যে আসামী হেলালও কোপ দেয়। ৪নং স্বাক্ষী বিল্লাল মোল্লা আগাইয়া আসিলে তাহাকে দাবড় দেয় এবং সকল আসামীগনসহ আরও অনেকে তার বাড়ির তৃতীয় তলা ভাংচুর এবং লুট করিয়া নেয়। তখন কবির ভূইয়া মাটিতে লুটিয়া পড়িলে তাৎক্ষনিকভাবে সিএনজি ড্রাইভার ইকরাম পিং- নানু মাতুব্বর, সাং- ছাগলদী এর সিএনজিতে করে স্বাক্ষী ১। কামরুল, পিতা- আজিজুল, ২। গিয়াস, পিং- মকলেস, উভয়সাং- ছাগলদী, থানা- নগরকান্দা, জেলা- ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ফরিদপুরে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। পোস্টমর্টেম করার পর লাশের দাফন সম্পন্ন হয়।
বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ রিংকু এই প্রতিবেদককে বলেন, ঘটনার দিন আমি ঢাকায় ছিলাম, শুনেছি কৃষকদলের শহিদুল ইসলাম বাবুল ঢাকা থেকে গাড়ি বহর নিয়ে তার নিজ এলাকায় গিয়ে সমাবেশের নামে সংঘর্ষর ঘটনা ঘটায়। এই মামলায় ঘটনা স্থানে না থাকলেও তাদের অনেকের নামে মামলায় আসামী করা হয়েছে।
কৃষক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন,ঘটনার দিন আমার নিজ এলাকায় শান্তি সমাবেশ করবো সে উপলক্ষে আমার কৃষক দলের লোকজন আমাকে ভালবেসে গাড়ি বহরের করে নেয়ার সময় শামা ওবায়েদ রিংকুর সমর্থকরা হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাঙ্গচুর করে ও কয়েকটি মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এছাড়া নগরকান্দা বাজারে আমার নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায়।সে সময় আমার সমর্থক কবির ভূঁইয়াকে তারা কুপিয়ে মারে।
নগরকান্দা থানার ওসি আমিনুর রহমান বলেন, নিহত কবির ভূইয়ার স্ত্রী মোনজিলা বেগম (৪৪) বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার (২৪ আগস্ট) এ বিষয়ে হত্যা মামলা হয়েছে।
What's Your Reaction?