নগরকান্দায় শিক্ষকদের থেকে চাঁদা তুলে শিক্ষা কর্মকর্তার আত্মসাতের অভিযোগ
অসুস্থ সাংবাদিককে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা বলে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ৮৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা (চাঁদা) তুলে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রওনক আরা বেগমের বিরুদ্ধে।
যে সাংবাদিকের নাম ভাঙিয়ে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে, সেই অসুস্থ সাংবাদিকের পরিচয় জানে না কেউ। এমনকি শিক্ষা কর্মকর্তাও তাকে চেনেন না বলে দাবি করেছেন। শিক্ষা কর্মকর্তার দাবি, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে সমালোচনা চলছে।
একাধিক শিক্ষকের অভিযোগ, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রওনক আরা বেগম যোগদানের পর থেকে কখনও শিক্ষকদের আত্মীয়স্বজন আবার কখনও সাংবাদিক অসুস্থসহ নানা অজুহাতে সাধারণ শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা তোলেন। পরে সেই টাকা তিনি নিজেই আত্মসাৎ করেন। গত ১৩ নভেম্বর শিক্ষা অফিসের সাধারণ সভায় স্থানীয় এক সাংবাদিকের অসুস্থতার কথা বলে উপজেলার ৮৫টি বিদ্যালয় থেকে টাকা তোলেন তিনি।
টাকা উত্তোলনের বিষয়টি নিশ্চিত করে শিক্ষকরা জানান, শিক্ষা কর্মকর্তা তাদের বলেছেন, এক সাংবাদিক অসুস্থ, তাকে সহযোগিতা করতে হবে। তাই তারা উপজেলার ৮৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কর্মরত ৫৫৬ জন শিক্ষক আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। প্রত্যেক স্কুলের প্রধান শিক্ষক ২০০ ও সহকারী শিক্ষকরা ১০০ টাকা করে দিয়েছেন। সেই টাকা কোন অসুস্থ সাংবাদিককে তিনি দিয়েছেন, তার পরিচয় দেননি শিক্ষা কর্মকর্তা।
আবু তাহের নামে এক সাংবাদিকের নাম ভাঙিয়ে টাকা তোলার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। নগরকান্দা প্রেসক্লাবের সভাপতি শওকত আলী শরীফ বলেন, অসুস্থ সাংবাদিকের নামে কেউ সহযোগিতা চাইলে শিক্ষা কর্মকর্তা সাংবাদিকদের সংগঠনে জানাতে পারতেন। এ ছাড়া আবু তাহের নামে নগরকান্দায় কোনো সাংবাদিক নেই। বিষয়টি তদন্ত করে শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।
নগরকান্দা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রওনক আরা বেগম বলেন, আবু তাহের নামে এক সাংবাদিক ফোনে কল করে অসুস্থতার কথা বলে আর্থিক সহযোগিতা চান। তাই শিক্ষকদের থেকে টাকা তুলে ওই সাংবাদিকের বিকাশ নাম্বারে পাঠিয়ে দিয়েছি। তবে ওই সাংবাদিককে কখনও দেখিনি এবং তাকে চিনিও না। এখন সেই নাম্বারে কল করলে বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। পরে জানতে পারি আবু তাহের নামে নগরকান্দায় কোনো সাংবাদিকই নাই। আমি প্রতারণার শিকার হয়েছি।
নগরকান্দার ইউএনও কাফী বিন কবির বলেন, শিক্ষা কর্মকর্তা যাচাই-বাছাই করে টাকাটা দিলে ভালো হতো। যে নাম্বারে টাকা পাঠিয়েছেন, ওই নাম্বারটির বিরুদ্ধে থানায় জিডি করা হয়েছে। প্রতারককে খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
What's Your Reaction?