নাসিরনগরে অপহরণের শিকার নয়ন দাস উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় ভিকটিম নয়ন দাসকে উদ্ধারসহ পাঁচ অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২১ মার্চ) রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে নয়ন দাসকে উদ্ধার এবং অপহরণে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় অপহরণে ব্যবহৃত একটি হায়েস মাইক্রোবাসও জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন আফসার মিয়া ওরফে আফসার ওরফে হৃদয় (৩০), নাজমুল হোসেন নিলয় (২৮), মো. সাব্বির হোসেন (২৭), মো. রুবেল মোল্লা (৩০) এবং মো. মিলন মিয়া (২৫)।
নয়ন দাস নাসিরনগরের ফান্দাউক বাজারে বিকাশ, কম্পিউটার ও মোবাইল সার্ভিসিংয়ের ব্যবসা করতেন। গত ১৬ মার্চ সকাল ৯টার দিকে দুই ব্যক্তি মোবাইল ফোন ঠিক করানোর কথা বলে তার দোকানে আসেন এবং পরে একটি হায়েস মাইক্রোবাসে করে তাকে অপহরণ করেন। ওই দিন রাত ৯টার দিকে এক অজ্ঞাত মোবাইল নম্বর থেকে নয়নের ব্যবহৃত ফোনে কল আসে। তার মা ফোনটি রিসিভ করলে অপহরণকারীরা নয়নের মুক্তির জন্য ১০ লাখ টাকা দাবি করে এবং পুলিশকে খবর দিলে তাকে হত্যার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় ১৯ মার্চ নয়নের বাবা রামু দাস নাসিরনগর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন।
মামলার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপার এহতেশামূল হকের নির্দেশনায় নাসিরনগর থানার একটি চৌকস টিম তদন্ত শুরু করে। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অপহরণকারীদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। ২১ মার্চ রাতে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে নাজমুল হোসেন নিলয় ও মো. সাব্বির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কদমতলীর দনিয়া এলাকায় একটি বাসা থেকে অপহৃত নয়ন দাসকে উদ্ধার করা হয়।
পরে, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান এলাকা থেকে অপহরণে ব্যবহৃত হায়েস গাড়িটি জব্দসহ চালক মো. রুবেল মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর নাসিরনগরের ফান্দাউক এলাকা থেকে অন্যতম পরিকল্পনাকারী মো. মিলন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃতরা সংঘবদ্ধ অপহরণ চক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে লোকজনকে অপহরণ করে এবং ক্লোন করা সিম ব্যবহার করে মুক্তিপণ আদায় করত। এই চক্রের মূল পরিকল্পনাকারী ও নেতা আফসার মিয়া ওরফে আফসার ওরফে হৃদয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাশি, ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
What's Your Reaction?






