পা দিয়ে লিখে কাউনিয়ার কলি রানীর এসএসসির জয়
দৃঢ় মনোবল আর ইচ্ছা শক্তি থাকলে যে নির্দিষ্ট লক্ষে পৌঁছানো যায় তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ কাউনিয়ার কলি রানী (১৬)। সে পঙ্গুত্বকে বাঁধা মনে না করে শারিরীক প্রতিবন্ধিতাকে জয় করে হাতের বদলে পা দিয়ে লিখে কাউনিয়া বালিকা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে চলতি এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে জিপিএ ৩.৫০ অর্জন করে। শুধু তাই নয় সে ভাল গানও গাইতে পারে। গানগেয়ে একাধীক সম্মাননা স্মারক পেয়েছে সে। পা দিয়ে চালাতে পারেন কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন, কলি রানীর ইচ্ছে পড়ালেখা শেষ করে বিসিএস ক্যাডার হয়ে মানুষের সেবা করতে চায়।কলি রানী কাউনিয়া উপজেলার গদাই গ্রামের রুপালী রানীর কন্যা। তার পিতা মনোরঞ্জন রায় কলি যখন গদাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে তখনই পরলোকগমন করেন। তারা তিন ভাই তিন বোন। কলি রানী সবার ছোট।
তার মা রুপালি রানী জানায়, জন্ম থেকেই তার মেয়ের হাতের আগুল নেই, হাত বাকা ও ছোট, কলম ধরতে পারে না। মেয়ের অদম্য ইচ্ছা শক্তি ও দৃঢ় মনোবল নিয়ে ডান পা দিয়ে লেখা শুরু করে। ধীরে ধীরে লিখতে লিখতে সে দ্রুত গতিতে লেখার কৌশল আয়ত্ব করে। সে যখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম যাওয়া শুরু করে তখন তার সহপাঠিরা তাকে নিয়ে হাসাহাসি ও উপহাস করত। বাড়িতে ফিরে সে মন খারাপ করতো। পরে শিক্ষকদের সার্বিক সহযোগিতায় সে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা পায়। সহপাঠীরাও তাকে মেনে নিয়ে বন্ধু সুলভ আচরন শুরু করে। ৫ম শ্রেণিতে সে এ গ্রেড পেয়ে উত্তির্ণ হয়। তিনি তার মেয়ের স্বপ্ন পূরণের জন্য জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া ও সহযোগিতা চেয়েছেন।
কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিদুল হক জানান,কলি রানী কাউনিয়া বালিকা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে চলতি এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ ৩.৫০ পয়েন্ট অর্জন করে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তাকে আটকে রাখতে পারেনি। আমরা চাই তার অদম্য অগ্রযাত্রা যেন থেমে না যায়। সে যেন উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে। এজন্য উপজেলা প্রশাসন পাশে থাকবে।
What's Your Reaction?