পাঁচ বছর পর কুবিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন

কুবি প্রতিনিধিঃ
Apr 14, 2025 - 17:56
 0  9
পাঁচ বছর পর কুবিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন

দীর্ঘ পাঁচ বছর পর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপিত হলো বাংলা নববর্ষ ১৪৩২। সোমবার (১৪ এপ্রিল) দিনব্যাপী নানা আয়োজন ও শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোঃ হায়দার আলীর নেতৃত্বে প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে একটি বর্ষবরণ শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বৈশাখী চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

শোভাযাত্রায় অংশ নেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ আবদুল হাকিম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনসহ বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।

শোভাযাত্রা শেষে শুরু হয় দিনব্যাপী নানান ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয় ছেলেদের মোরগ লড়াই ও মেয়েদের মিউজিক্যাল চেয়ার প্রতিযোগিতা, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও আনন্দের সৃষ্টি করে।

সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বৈশাখী চত্বরে শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত হয় লোকগান, নৃত্য, কবিতা আবৃত্তি ও নাট্যাংশ। বাংলা নববর্ষের ঐতিহ্য তুলে ধরতে প্রতিটি বিভাগ থেকে পিঠাপুলির স্টল বসানো হয়। এসব স্টলে পরিবেশিত হয় পাটিসাপটা, চিতই, দুধচিটা, মালপোয়া সহ বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী পিঠা, যা দর্শনার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করে।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা জানিয়ে ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোঃ হায়দার আলী বলেন, “বাংলা নববর্ষ এদেশের সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের মিলনমেলা। এই উৎসব ধর্মীয় সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ। এত অল্প সময়ে এত সুন্দর ও প্রাণবন্ত আয়োজন করায় আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই।”

প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল বলেন, “আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য যেন হারিয়ে না যায়, সে বিষয়ে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। এই আয়োজন নবপ্রজন্মের মাঝে দেশপ্রেম ও সাংস্কৃতিক চেতনাকে জাগ্রত করবে।”

ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, “পহেলা বৈশাখ আমাদের জন্য নতুন সম্ভাবনার বার্তা নিয়ে এসেছে। অতীতের ফ্যাসিবাদী ছায়া থেকে বেরিয়ে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সঙ্গে নিয়ে আমরা সুন্দর আগামীর দিকে এগিয়ে যেতে পারি।”

দীর্ঘদিন পর এ ধরনের আয়োজন হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে দেখা যায় বাড়তি উৎসাহ-উদ্দীপনা। দিনব্যাপী এ উৎসব কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার এক অনন্য বহিঃপ্রকাশ হয়ে ওঠে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow