পাটের আবাদে ব্যয় বেড়েছে ৩০ শতাংশ

ফরিদপুরের সালথায় পাটচাষিরা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। একদিকে প্রতিনিয়ত বাড়ছে উৎপাদন খরচ, অন্যদিকে বাড়ছে না কাঙ্ক্ষিত দাম। এতে চাষাবাদের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেকে।
গত বছর প্রকারভেদে প্রতিমণ পাটের দাম ছিল ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। এতে উৎপাদন ব্যয় ও বিক্রয় মূল্য প্রায় সমান হয়ে পড়ায় লাভের মুখ দেখা কঠিন হয়ে পড়ে চাষিদের জন্য।
দেশের পাট উৎপাদনে ফরিদপুর শীর্ষে, আর সেই জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাট চাষ হয় সালথা উপজেলায়। চলতি মৌসুমে উপজেলাজুড়ে ১২ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে, যা মোট আবাদি জমির প্রায় ৯০ শতাংশ। তবে কৃষকদের ভাষ্য, এবার পাটচাষে খরচ বেড়েছে অন্তত ৩০ শতাংশ। তাই উৎপাদন ব্যয়ের লাগাম টানতে কৃষি বিভাগের কার্যকর সহযোগিতা কামনা করছেন তারা।
সালথার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজ তুলে নেওয়ার পর এখন কৃষকেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন পাটের আবাদ নিয়ে। অনেক ক্ষেতেই চারা গজাতে শুরু করেছে, কোথাও কোথাও তা ইতোমধ্যে ২-৩ ইঞ্চি পর্যন্ত বেড়েছে। কেউ সেচ দিচ্ছেন, কেউ আগাছা পরিষ্কার করছেন—চলছে পুরোদমে পরিচর্যার কাজ।
তবে বৈরী আবহাওয়ায় পানির সংকট, সার-ওষুধ ও শ্রমিকের মূল্যবৃদ্ধি কৃষকদের নাকাল করে তুলেছে। তারওপর উৎপাদিত পাটের ন্যায্য দাম না পাওয়ার আশঙ্কা চাষিদের মধ্যে হতাশা বাড়িয়ে তুলেছে।
স্থানীয় চাষি সহিদ মিয়া বলেন, “ভূগর্ভস্থ পানির স্তর এতটাই নিচে নেমেছে যে অনেক মেশিনেই পানি উঠছে না। জমিতে সেচ দিতে এবার খরচ বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে সার, বীজ ও ওষুধের অতিরিক্ত দাম।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুদর্শন শিকদার বলেন, “বীজ বপণের সময় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কৃষকদের নিজ খরচে সেচ দিতে হয়েছে, ফলে খরচ বেড়েছে। তবে মৌসুম শেষে যদি বৃষ্টিপাত ভালো হয় এবং পাটের দাম সন্তোষজনক হয়, তাহলে কৃষকরা লাভবান হবেন।”
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহাদুজ্জামান জানান, “জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। তবে সঠিক পরিচর্যা ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ালে এই ব্যয়ের প্রভাব কিছুটা কমানো সম্ভব।”
What's Your Reaction?






