প্রতিবন্ধকতাকে জয় করতে চায় আব্দুর রহমান, ইউএনওর সহযোগিতায় পেল ইলেকট্রিক হুইলচেয়ার

শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হলেও পড়াশোনার প্রতি প্রবল আগ্রহ রয়েছে আব্দুর রহমান খানের। বয়সে ছোট হলেও তার ইচ্ছাশক্তি প্রবল। জন্ম থেকেই দুটি পা বিকল থাকায় হাঁটতে পারে না সে। হামাগুড়ি দিয়ে চলতে হয়। হাতের সাহায্যে কোনো মতে লিখতে পারে। তবু দমে যায়নি রহমান।
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার অন্যতম বিদ্যাপীঠ বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এই ছাত্রের বাবা মো. ছাত্তার খান পেশায় একজন রিকশাচালক। তাদের বাড়ি ভাষানচর ইউনিয়নের ছৈজদ্দিন মোল্লার ডাঙ্গী গ্রামে।
রহমানের বাবা ছাত্তার খান জানান, প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯টার সময় তিনি ছেলেকে রিকশায় করে স্কুলে পৌঁছে দেন। জরুরি ভাড়া থাকলেও ছেলেকে না নিয়ে কোথাও যাওয়া তার পক্ষে সম্ভব হয় না। আবার স্কুল ছুটির পরও তাকে বাসায় ফিরিয়ে আনতে হয়।
রহমানের পরিবারে তার মা ও আট বছরের একটি বোন রয়েছে। মা গৃহিণী। বাবার রিকশা চালানোর আয় দিয়েই চলে তাদের নিম্নবিত্ত পরিবার।
কিছুদিন আগে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকিয়া সুলতানা বিদ্যালয় পরিদর্শনে গেলে রহমানের প্রতি তার দৃষ্টি পড়ে। তিনি রহমানের স্কুলে আসার কষ্ট দেখে তাকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এরপর বুধবার (১৩ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টায় সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আব্দুর রহমানকে একটি ইলেকট্রিক হুইলচেয়ার প্রদান করা হয়। রহমানের পক্ষে তার বাবা এটি গ্রহণ করেন।
হুইলচেয়ার পেয়ে আব্দুর রহমান আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে। সে বলে, "আমি খুব খুশি। এতদিন বাবা-মা অনেক কষ্ট করে আমাকে স্কুলে নিয়ে যেত। স্কুলে এক জায়গায় বসে থাকতে হতো, কোথাও যেতে পারতাম না। এখন হুইলচেয়ার থাকার কারণে একটু ঘুরতে পারব।"
ইউএনও জাকিয়া সুলতানা বলেন, "বিদ্যালয়ে সরকারি কাজে গেলে রহমানকে দেখতে পাই। তার চলাচলের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়েছে। প্রতিবন্ধীদের প্রতি আমাদের যত্নশীল হওয়া উচিত, এতে তাদের মানসিক উন্নতি হয়। ভবিষ্যতে রহমানের জন্য আরও সহযোগিতা করা হবে, ঈদের সময় তার জন্য নতুন জামাকাপড়ের ব্যবস্থা করা হবে।"
What's Your Reaction?






