প্রসঙ্গঃ ন্যাশনাল ব্যাংক, অস্তিত্ব রক্ষা হওয়ার পথে কি!
দেশের বাণিজ্যিক প্রেক্ষাপটে বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলো কঠিন সময় পার করে যাচ্ছে। একদিকে যেমন তারল্য সংকট অন্যদিকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ খেলাপি হওয়ার কারণে সাধারণ গ্রাহকদের মাঝে ব্যাংকগুলো নিয়ে কোন সুখবর নেই।
ব্যাংকের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থে সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংক একিভূতক্ষরণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে । দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংক গুলোর সাথে ব্যবসা করার সুযোগ করে দিয়ে সাধারণ গ্রাহকদের আমানত সঠিক ব্যবহার করার লোককে ব্যাংক ব্যবসায়ীদের কে সুযোগ করে দিয়েছে সরকার। ইতিমধ্যে কয়েকটি ব্যাংক একিভূত করার পর ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড পিএলসি কে আরেকটি বড় ব্যাংকের সাথে একিভূত করার শেষ পর্যায়ে এসে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে হঠাৎ করে বড় ধরনের পরিবর্তনে এনে সিকদার গ্রুপের হাত থেকে কেডিএস গ্রুপ কে দিয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক পরিচালনা করার জন্য।
সাধারণত এ ধরনের ব্যাংকে ব্যবসায়ীরা জড়িত রয়েছে বেশি ব্যাংকের সাধারণ গ্রাহক কম বললেই চলে তাই অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় সাধারণ আমানতকারী এমন নেই । কিন্তু যারা ন্যাশনাল ব্যাংক এর সাথে ব্যবসায়িকভাবে জড়িত তারা ইতিমধ্যে টেনশনে পড়ে গিয়েছিল এই ব্যাংকটি দেউলিয়া হচ্ছে কিনা । সিকদার পরিবারের পারিবারিক কলহ এবং ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে ন্যাশনাল ব্যাংক ঢুবতে বসার শেষ পর্যায়ে এসে একপ্রকার রক্ষা করে ফেলল কেডিএস গ্রুপ এগিয়ে এসে। এখন অন্তত ন্যাশনাল ব্যাংকে যারা আমানতকারী রয়েছে তারা এক প্রকার আস্তার জায়গায় ফিরে যেতে পারবে বলে মনে হয় । এ পর্যায়ে অন্তত আমানতকারীদের রাখা টাকা নিয়ে তেমন কোন চিন্তার কারণ না থাকলেও ভবিষ্যতে ব্যাংকের সঠিক কার্যক্রম পরিচালনায় ধারাবাহিকতা যদি সঠিক থাকে তাহলে ন্যাশনাল ব্যাংক আগের জায়গায় ফিরে আসতে পারে।
যদিও ন্যাশনাল ব্যাংক পি এল সি কে নিয়ে এস আলম গ্রুপ কে জড়িয়ে ফেলেছে কিছু ব্যক্তি এবং গ্রাহকগণ আপাতত মনে হচ্ছে যে গ্রুপের হাত থাক না কেন এই ব্যাংকটি পরিচালনা পর্ষদের যদি পরিবর্তন না আসতো তাহলে আমানতকারীদের অর্থ নিরাপদ থাকা নিয়ে সংশয় দেখা দিত এখন সেই সংশয় থেকে আপাতত আমানতকারীরা রক্ষা পেল বলে মনে হয়। ব্যাংকের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ যদি ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনার দায়িত্ব না নিতো তাহলে হয়তো এ ব্যাংক কি একীভূতকরণ হয়ে যেত এতে স্বতন্ত্র ভাবে পরিচালনা করা যেত না ব্যাংকটিকে। এখন স্বতন্ত্র পরিচালনার মাধ্যমে ন্যাশনাল ব্যাংকে আগের অবস্থানে ফিরিয়ে নিতে অনেক বড় ভূমিকা রাখতে হবে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ কে। কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব খলিলুর রহমান ন্যাশনাল ব্যাংকের শুরু থেকে উদ্যোক্তা পরিচালক হিসেবে জড়িত ছিলেন উনি একজন বিচক্ষণ ব্যবসায়ী তাই ন্যাশনাল ব্যাংকের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ব্যাংকের ভেতরে বাইরে সব ধরনের দুর্নীতি অনিয়ম মাথায় রেখে সঠিকভাবে পরিচালনায় মনোযোগী হবেন বলে ব্যবসায়ীদের ধারণা।
পাশাপাশি ব্যাংকের তালিকাভুক্ত ঋণ খেলাপীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করার জন্য শক্ত অবস্থান নিতে হবে নবনির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদ কে। আবার শুধুমাত্র এক শ্রেণীর ব্যবসায়ীদের লেনদেন করার পাশাপাশি খুব সাধারণ গ্রাহকদের ন্যাশনাল ব্যাংকের সাথে যুক্ত করার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে।
What's Your Reaction?