প্রেসক্লাবে আটকে রেখে মারধর, সাংবাদিকের মৃত্যু
বরগুনার প্রেসক্লাবে আটকে রেখে মারধের পর চিকিৎসাধীণ অবস্থায় তালুকদার মাসউদ নামের এক সাংবাদিকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শনিবার রাত এগারটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপতাালে ওই সাংবাদিক মৃত্যু বরণ করেন। এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারী বেলা ১১টার দিকে প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলায় তালুকদার মাসউদ হামলার শিকার হয়ে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
নিহত সাংবাদিক তালুকদার মাসউদ দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকা ও রাজধানী টেলিভিশন নামের একটি আইপি টিভির বরগুনা জেলা প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি নলটোনা ইউনিয়নের পদ্মা গ্রামের আবদুল ওয়াহাব মাষ্টারের ছেলে।
নিহত ইউপি সদস্য তালুকদার মাসুদের স্ত্রী সাজেদা জানান, গত ১৯ ফেব্রুয়ারী বেলা ১১টার দিকে বরগুনা প্রেসক্লাবের অভ্যন্তরে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে তর্কের এক পর্যায়ে এনটিভির বরগুনা প্রতিনিধি সোহেল হাফিজ ও তার ১০/১২জন সহযোগী মিলে হামলা চালিয়ে আহতাবস্থায় তালাবদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে বরগুনা ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাপসাতালে পাঠানো হয়।
এ ঘটনার ১১ দিন পর শনিবার (০২ মার্চ) রাত ১১ টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তালুকদার মাসউদ।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মাছরাঙা টেলিভিশনের বরগুনা প্রতিনিধি মুশফিক আরিফ বলেন, প্রেসক্লাবে ক্যরাম খেলা নিয়ে দ্বন্দের এক পর্যায়ে বরগুনা প্রেসক্লাবের ৩য় তলার অফিসরুমে বসে এনটিভির জেলা প্রতিনিধি সোহেল হাফিজের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন মিলে হামলা চালিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখে তাকে। আহতাবস্থায় সাংবাদিক তালুকদার মাসউদকে বরগুনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে তালাবদ্ধ করে প্রায় এক ঘন্টা জিম্মি করে নির্যাতন করা হয়। পরে বরগুনা সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ একেএম মিজানুর রহমান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বশিরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তালুকদার মাসউদকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠান।
নিহত তালুকদার মাসউদের মেয়ে সাদিয়া তালুকদার তন্নি বলেন, মৃত্যুর আগে আমার বাবা ভিডিও বার্তায় বলে গেছেন, গত ১৯ ফেব্রুয়ারী বরগুনা প্রেসক্লাবের ৩য় তলার অফিসরুমে বসে এনটিভির জেলা প্রতিনিধি সোহেল হাফিজের নেতৃত্বে দৈনিক ভোরের আকাশের জেলা প্রতিনিধি কাশেম হাওলাদার, এনটিভির ক্যামেরা পার্সন আরিফুল ইসলাম মুরাদসহ বেশ কয়েকজন মিলে হামলা চালিয়ে তালাবদ্ধ করে রেখেছিল। তন্নি বলেন, আমার বাবাকে ওরা প্রেসক্লাবে আটক রেখে হামলা করে হত্যা করেছে। আমি আমার বাবার হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
বরগুনা সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কাসেম মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, ‘ ১৯ ফেব্রুয়ারী বেলা ১১টার দিকে বরগুনা প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলা থেকে তালুকদার মাসুদ নামের এক সাংবাদিককে আমরা গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসায় পাঠিয়েছিলাম। গতকাল রাত ১১ টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি। এ ঘটনায় মামলার প্রস্ততি চলছে। মামলা হওয়ার পর আমরা যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেব।
What's Your Reaction?