ফরিদপুর জেলা পুলিশের প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত
ফরিদপুর জেলা পুলিশের প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়েছে।কোতয়ালী থানাধীন আলিয়াবাদ ইউনিয়নের ভ্যান চালক হারুন অর রশিদ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, ধারালো অস্ত্র উদ্ধার ও আসামী গ্রেফতার সংক্রান্তে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে উক্ত প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন তথ্য প্রদান করেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোর্শেদ আলম, এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইমদাদ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন কোতোয়ালি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান সহ জেলা পুলিশের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং ফরিদপুরের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উক্ত প্রেস ব্রিফিং এ জানানো হয় গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দুপুর অনুমান ০২.৩০ মিনিটের সময় কোতয়ালী থানাধীন আলিয়াবাদ ইউনিয়নের চর গজারিয়া (সাইনবোর্ড) এর পদ্মা নদীর দক্ষিণ পাশে জনৈক খালেক দেওয়ান এর মেহগনি বাগানের মধ্যে একটি অজ্ঞাতনামা মৃতদেহ পরে থাকতে দেখা যায়।
সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং লাশ সনাক্তের চেষ্টা করে। ডিসিস্টের পরিবার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং ডিসিস্ট এর স্ত্রী রহিমন বেগম সনাক্ত করেন যে লাশটি তার স্বামী হারুন অর রশিদ এর লাশ।
ডিসিস্ট হারুন অর রশিদ এর স্ত্রী রহিমন বেগম অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় একটি ছিনতাইসহ হত্যা মামলার এজাহার দায়ের করে। যার মামলা নং- ৪৮, তারিখ: ১৮/০২/২০১৪, ধারা-৩৯৪/৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।
মামলা বুজুর পর পুলিশ সুপার মহোদয়ের দিক নির্দেশনায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল ও অফিসার ইনচার্জ কোতয়ালী থানা, ফরিদপুরের নেতৃত্বে গুপ্তচর নিয়োগ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িত আসামীদের সনাক্ত করে, তাদের গ্রেফতার ও মালামাল উদ্ধারের জন্য কোতয়ালী থানার একটা চৌকস দল অভিযান শুরু করে।
তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও স্থানীয় সোর্সের মাধ্যমে ঘটনায় জড়িত আসামী সাইদুল শেখ (১৭) কে সনাক্ত করে ১৮/০৪/২০২৪ তারিখ রাত অনুমান ০২.৩০ মিনিটের সময় চরভদ্রাসন থানাধীন রমেশ বালার ডাঙ্গীর আসামীর বসত বাড়ী হতে গ্রেফতারপূর্বক মামলার ঘটনার সময় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে
সে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ঘটনার সাথে জড়িত অপর আসামী লিটন মন্ডল ওরফে রুবেল (২৪) ও রুমান মন্ডল (১৭) এর নাম ঠিকানা প্রকাশ করে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে আসামী রোমান এর বসত বাড়ী হতে রাত ০৩.০০ টায় তাকে গ্রেফতারপূর্বক মামলার ঘটনার সময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ১টি লোহার পাতের চাকু বিছানার নিচ হতে উদ্ধার করা হয়। একই তারিখ অভিযান পরিচালনা করে অত্র মামলার ঘটনার মূল হোতা ও পরিকল্পনাকারী আসামী রুবেলকে রাত ০৩.৩০ টায় তার ভাইয়ের বাড়ীর সামনের দোকানঘর হতে গ্রেফতার করা হয়।
আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে আসামী লিটন মন্ডল ওরফে রুবেল এর পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৬/০২/২০২৪ খ্রি. তারিখ রাত অনুমান ০৬ ০০ ঘটিকার সময় কোতয়ালী থানাধীন গজারিয়া বাজার স্ট্যান্ড হতে সাইনবোর্ড যাওয়ার জন্য আসামী লিটন মন্ডল ও রুমান অত্র মামলার ডিসিস্ট হারুনের ভ্যান ১৫০/- টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে। পথিমধ্যে গজারিয়া বাজারের কলাইহাট হতে আসামীরা অপর আসামী সাহিদুলকে ভ্যানে তুলে নেয়।
সেখান থেকে ০৩জন হারুনের ভ্যানসহ হারুনকে সাথে নিয়ে কোতয়ালী থানাধীন আলিয়াবাদ ইউনিয়নের চর গজারিয়া (সাইনবোর্ড) এর পদ্মা নদীর দক্ষিন পাশে জনৈক খালেক দেওয়ান এর মেহগনি বাগানের মধ্যে নিয়ে যায়। এসময় আসামী রুবেল একটি ধারালো চাকু বের করে হারুনকে ভয় দেখিয়ে ভ্যান রেখে চলে যেতে বলে। তখন হারুন অনুনয়-বিনয় করলে আসামী
বুমান ও আসামী সাহিদুল ভিসিস্ট হারুনকে বলে- 'বেঁচে থাকলে আবার ভ্যান কিনতে পারবেন। এখান থেকে চলে যান'।
এ কথা বলার পর ডিসিস্ট হারুন বুমান ও সাহিদুলের দিকে ঘুড়লে আসামী রুবেল তার হাতে থাকা চাকুর ধারালো অংশ দিয়ে ডিসিস্টের পিছন থেকে মাথায় আঘাত করলে হারুন মাটিতে পড়ে যায়। তখন রুমান, সাহিদুল ও রুবেল ৩জন মিলেই হাবুনের মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে বারংবার আঘাত করতে থাকে। এক পর্যায়ে ডিসিস্ট নিস্তেজ হয়ে পড়লে আসামী বুবেল, আসামী ঘুমান ও আসামী সাহিদুলকে বাড়ী চলে যেতে বলে এবং সে ভ্যানের ব্যবস্থা করে এসে তাদের সাথে দেখা করার কথা বলে। রুবেল ভিসিস্টের পরিহিত হড়ি দিয়ে ডিসিস্টের মাথা ঢেকে দিয়ে ভ্যান নিয়ে হাজিগঞ্জের দিকে চলে যায়। ঘটনার পরবর্তী সাক্ষাতে আসামী রুবেল আসামী রুমানকে লুন্ঠিত ভ্যান বিক্রয়ের ১,০০০/ (এক হাজার) টাকা দেয়।
এ মামলায় লুঞ্চিত ভ্যান গাড়ী উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে।
What's Your Reaction?